নিজস্ব প্রতিবেদক, রামুঃ
রামুতে দেড় শতাধিক গ্রামের মানুষের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করিয়ে কার্ড বানিয়ে দিয়েছে কলেজ শিক্ষার্থীরা। সেই কার্ড সংরক্ষণ বিষয়েও সচেতন করে দেয়া হয়েছে। ১৬৩ জনের রক্ত গ্রুপ নির্ণয় করে, তাদের নাম-ঠিকানা ও রক্তের গ্রুপ লিখিতভাবে সংরক্ষন করেছে কলেজ শিক্ষার্থীদের এ সংগঠন ‘রামু ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশন’।
গতকাল রোববার (২৭ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবী এ সংগঠন বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচী পরিচালানা করে, রামু কেন্দ্রীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে রামু-মরিচ্যা সড়কের অফিসের চর গাবতলি এলাকায়। ‘কেন রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করাটা জরুরি’ এ বিষয়টি গ্রামের মানুষদের সচেতন করতেই ‘রামু ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশন’ এ কর্মসূচীর আয়োজন করে।
গ্রামের মানুষের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা হল কেন? এ বিষয়ে ‘রামু ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশন’ কার্যকারী সদস্য মোর্শেদ আলম বলেন, থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা ও রক্তদাতার সন্ধানের চিন্তাভাবনা থেকেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রামবাসী ও পথচারীদের বোঝানো হয়েছে, বিপদ হঠাৎ করেই আসে। রক্তের গ্রুপ জেনে রাখলে অনেক সুবিধা হয়। কিছু দিন আগে রামু সরকারি কলেজে পড়ুয়াদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে কার্ড প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, রক্ত গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচি সফল করতে আমরা গ্রামবাসীদের সহযোগিতা পেয়েছি। থ্যালাসেমিয়া বাহক নির্ণয় বিষয়েও আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করবো।
যদি করি রক্তদান, বাঁচাতে পারি একটি প্রাণ’, ‘একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন’ এ শ্লোগানে অনুষ্ঠিত ফ্রি রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেন, ‘রামু ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশন’ কার্যকারী সদস্য মোর্শেদ আলম, সাজ্জাদ হোসেন অভি, সহ-কার্যকারী সদস্য মারুফ, দেলোয়ার, তাসিন, তারেক, কৌশিক, কাউছার, মাসুদ খান, রেজাউল, বাপ্পি, আসিফ বীন আমান প্রমুখ। এ কর্মসূচি’র সমন্বয়কারী ছিলেন, সাঈদ, লোহমান ও নুরুল হুদা।
অফিসের চর গাবতলি এলাকার পান বিক্রেতা এমদাদ মিয়া জানান, রক্ত গ্রুপ পরীক্ষা কেন করতে হয়, করলে কি উপকার হয় জেনেছি ওই কলেজ ছাত্রদের কাছে। রক্ত পরীক্ষা নিয়ে আমরা একটা ভয় ছিল। সেই ছাত্ররা আমাকে রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে জানিয়েছে। তাদের কথা নিজের ভয় দূর করে, আমার রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেছি। রক্তের গ্রুপ লেখা একটি কার্ড দিয়েছে, তা স্বযতেœ রাখার জন্যও বলেছে এ শিক্ষার্থীরা।
‘রামু ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশন’ আয়োজিত এ ক্যাম্পে রক্ত গ্রুপ পরীক্ষা করেন, রামু প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি খালেদ শহীদ। তিনি বলেন, প্রশংসনীয় এ উদ্যোগ অবশ্যই দৃষ্টান্তযোগ্য। কলেজ শিক্ষার্থীরা রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে এ অঞ্চলের মানুষের অনেক উপকার করেছে। গ্রুপ জানা থাকলে সহজেই রক্ত দিয়ে একজন মানুষকে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব। রক্ত দেয়া পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ও নি:স্বার্থ উপহার। রক্তের অভাবের কারণে বহু রোগীর প্রাণ সংকটের মুখে পড়ে। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা ও রক্তদান সম্পর্কে গ্রামের অনেক মানুষ কিছুই জানেনা। ‘রামু ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশন’ আয়োজিত এ কর্মচূচি এ অজ্ঞতা অনেকাংশে দূর করবে।