এ.এম হোবাইব সজীব, চকরিয়া:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজিঃ নং বি ৭২৬) নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও থামানো যাচ্ছেনা চাঁদা আদায়ের অপচেষ্টা, এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবহন চালকদের।
রমজানের ঈদের সময় ‘ঈদ বোনাস ও নেতাদের চাঁদা’ দাবি করে চাঁদা তুললেও এখনও তারা চাঁদা আদায় বন্ধ করেনি বলে দাবি করেন চালকরা। এতে অতিষ্ট পরিবহন চালকরা চাঁদাবাজির ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে লাগাতার পরিবহন ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছেন।
জানা গেছে, ঈদের আগে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে শ্রমিক নেতা গাঁ ডাকা দিলে ঈদের পর আবারও চাঁদা আদায় করছেন। তারা আগে নির্দিষ্ট কিছু গাড়ি থেকে চাঁদা নিলেও এখন ছারপোঁকা, ম্যাজিক পরিবহন থেকে চাঁদা তুলছেন। এতে কেউ প্রতিবাদ করলে কেন্দ্রীয় নেতাদের নামে ভাতা দাবি করে চাঁদা আদায় করছে।
এতে চালকদের হয়রানি ও চাঁদা আদায় বন্ধের দাবিতে পরিবহন চালকরা কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। তারা দাবি করেন, যদি আরাকান পরিবহন ইউনিয়নের নেতাদের চাঁদাবাজি বন্ধ না হয় তা হলে ওই গাড়ির চালকরা গাড়ি চলাচল বন্ধ করে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিবে।
পরিবহন চালকদের অভিযোগ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের শহীদ আবদুল হামিদ বাস টার্মিনাল এলাকায় এই চাঁদা আদায় করছে। এই চাঁদা তুলছেন আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত চকরিয়া-লামা-আলীকদম রোড কমিটির সমিতির সভাপতি রফিক আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল শ্রমিক। কিন্তু চকরিয়া থেকে চলাচলরত আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের আরো কয়েকটি শাখা রয়েছে। কিন্তু তারা এবিষয়ে কোন কিছূ জানে না। সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, সরকার সারাদেশে তিন চাকার যান বন্ধ করে দেওয়ার পর সড়কে চার চাকার জি-টু, পিয়াগো ও ফোর হুইলার গাড়ি আমদানি করা হয়। এসব গাড়ি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া-ইদগাঁও লাইনে চলাচলরত রয়েছে।
এদিকে গেল রমজানের ঈদের আগে ও পরে আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নামে টোকেন দিয়ে চাঁদা আদায় করছে শ্রমিক নেতারা। শুধু ওই চার চাকার যান থেকে গত কয়েকদিন ধরে চাঁদা আদায় করছেন তারা। এতে চালক-শ্রমিকরা চরম ক্ষোপ প্রকাশ করেছেন। চাঁদা না দিলে চালকদের প্রতিনিয়ত মারধরসহ নানাভাবে হয়রানি করছেন তারা।
এদিকে জি-টু, পিয়াগো ও ফোর হুইলার গাড়ির মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সড়কে গাড়ি চলাতে যত নিয়ম মেনে চলতে হয় তা পূরণ করে এসব গাড়ি মহাসড়কে নামানো হয়েছে। কিন্তু কিছুদিন ধরে আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নাম ব্যবহার করে একদল শ্রমিক চাঁদাবাজ প্রতি গাড়ি থেকে জোর করে ৩০টাকা প্রতিদিন আদায় করছেন। এতে চাঁদা না দিলে চালকরা মারধরসহ ও নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। তারা দাবি করেন, যারা আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা আদায় করছেন লামা-আলীকদম-থানছি সড়কে আলাদা লাইনও রয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত চকরিয়া-লামা-আলীকদম রোড কমিটির সমিতির সভাপতি রফিক আহমদ আমাদের রামু ডটকমকে বলেন, আমরা বৈধভাবে চাঁদা তুলছি। এটি সংগঠনের একটি নিয়মিত রেওয়াজ। তবে এটি চাঁদা নয়। আমাদের সংগঠনের আওতাধীন সড়কে চলাচলরত সিএনজি গাড়ি থেকেও চাঁদা আদায় করতে পারব।