অনলাইন ডেস্কঃ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আর ভরসা রাখতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জনগণকে যে আশা রাখতে বলেছেন, ভরসা রাখতে বলেছেন; সেই ভরসা মানুষ কোত্থেকে রাখবে? একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর সরকারের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া এ প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল আরও বলেন, দেশের অর্থনীতি চরমভাবে নিচে নেমে গেছে। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে অর্থনীতির যে বর্ণনা দিয়েছেন, বাস্তবে তার উল্টোটা বিরাজ করছে। ব্যাংকগুলো ভেঙে পড়েছে, সব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। মানুষ আস্থা রাখবে কোথায়? প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য ক্ষমতাসীনদের জন্য। তার আত্মতুষ্টির জন্য।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সাধারণ মানুষের আয় কমে যাচ্ছে, ব্যয় বাড়ছে। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়েছে। আজকে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে সরকারের বক্তব্য হচ্ছে, বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। এই রোল মডেল হচ্ছে দুর্নীতি, দুঃশাসনের।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে যে ভাষণ দিয়েছেন, তাতে জাতি হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছে। বর্তমানে দেশের প্রধান সংকট হচ্ছে রাজনৈতিক। একটি অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। সে ক্ষেত্রে জাতির একটা প্রত্যাশা ছিল, প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের মধ্যে এ সংকট নিরসনের একটা পথ দেখাবেন। বিতর্কিত নির্বাচন বাতিল করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটি নতুন নির্বাচনের কথা বা তার একটা ইঙ্গিত দেবেন। কোনোটাই তিনি করেননি।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খণ্ডন করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কতগুলো বক্তব্য রেখছেন, যা সত্য নয়। তিনি বলেছিলেন, ৭৫ পরবর্তী সময়ে দেশের মানুষ জরাজীর্ণ ছিল, কঙ্কালসার ছিল। এটা সম্পূর্ণ উল্টো কথা। তার আগে ১৯৭২-৭৫ এদেশে একটা চরম দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যর্থতার কারণে। ওই সময়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বলেছিলেন, এই দেশটা এক তলাবিহীন ঝুড়ি। ৭৫-পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমানের দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বে এই অবস্থার সম্পূর্ণ পরিবর্তন ঘটে। তিনি তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে সব সময় বিএনপিকে দোষারোপ করা হয় যে, বিএনপি সন্ত্রাস করেছে। কিন্তু তিনি ভুলে গেছেন, তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিন হরতাল করেছেন। সেই সময়ে বাসে ১১ জন ব্যক্তিকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে এবং এই আন্দোলনের ফলে অনেকে নিহত হয়েছেন। সেই কার্যক্রমটা তারা এখনও ধরে রেখেছে। তারা হত্যা করছে, তারা বিচারবহির্ভূত হত্যা করছে। তারা তুলে নিয়ে গিয়ে মারছে, গুম হচ্ছে, নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে। এই জিনিসগুলো প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আসেনি।
সূত্রঃ সমকাল