লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
কোভিড-১৯’য়ে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়ার পর ফুসফুসের কার্যকারিতা ফিরে পেতে সময় লাগতে পারে।
কোভিড-১৯’য়ের এই মহামারীর সময়ে সবারই চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু হওয়া উচিত নিজেকে এবং আশপাশের মানুষকে সুরক্ষিত রাখার সর্বাত্বক চেষ্টা। চিকিৎসকরা নিরলস পরিশ্রম করছেন রোগীদের সুস্থ করতে। গবেষক ও বিজ্ঞানীরা এর প্রতিরোধক আর প্রতিষেধক খুঁজতে মরিয়া।
তবে যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের কী পরিস্থিতি? তারা কি সারাজীবনই দুর্বল ফুসফুস নিয়ে বেঁচে থাকবে?
ভারতের ফোর্টিস হাসপাতালের ‘পালমোনোলজি’ বিভাগের প্রধান বিকাশ মোরিয়া বলেন, “কোভিড-১৯’য়ের উপসর্গ আছে এরকম রোগীর ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে।”
“যেহেতু এটি নতুন ভাইরাস তাই ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কতদিনে স্বাভাবিক হবে, আদৌ হবে কি-না তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে শ্বাসতন্ত্রকে আক্রমণ করে এমন অন্যান্য ভাইরাসের অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যেতে পারে যে কয়েক সপ্তাহ, মাস কিংবা বছরের মধ্যে তা স্বাভাবিক হতে পারে। সমস্যার মাত্রা নির্ভর করবে ফুসফুস কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, রোগীর ‘ভেন্টিলেটর’ প্রয়োজন আছে কি-না ইত্যাদির ওপর।”
অর্থাৎ, কোভিড-১৯’য়ের আক্রমণে যাদের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের দৈনন্দিন কাজ ও সাধারণ ‘কার্ডিও’ ব্যায়াম করতেও অসুবিধা হতে পারে।
মোরিয়া বলেন, “সময়ের সঙ্গে ফুসফুসের অবস্থা ভালো হলে কার্যক্ষমতাও বাড়বে। অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর ওষুধের মধ্যকার কয়েকটি উপকারে আসতে পারে।”
ভারতের মনিপল হাসপাতালের ‘পালমোনোলজি অ্যান্ড রেস্পিরাটরি মেডিসিন’ বিভাগের প্রধান পুনিত খান্না বলেন, “চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় হওয়া সীমিত পরিসরে কয়েকটি গবেষণায় ‘কোভিড-১৯’ থেকে মুক্তি পাওয়া মানুষদের ফুসফুসে গুরুতর কোনো দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আলামত পাওয়া যায়নি। তবে এদের মধ্যকার ২০ শতাংশ, যাদের তীব্র নিউমোনিয়া হয়, তাদের ফুসফুসে সাময়িক সময়ের জন্য অল্প ‘ফাইব্রোসিস’ সম্ভবত দেখা গেছে। এমনটা হলে তাদের দীর্ঘমেয়াদি ফুসফুসের সমস্যায় ভুগতে হতে পারে।”
অধিকাংশই সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেছেন। তাদের উচিত ‘ব্রিদিং এক্সারসাইজ’ করা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা, যাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়।
খান্না বলেন, “দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ মাফিক ওষুধও খেতে হবে দীর্ঘদিন। করোনাভাইরাসে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও দেখা যাচ্ছে তাই একবার রোগ মুক্ত হলেই নিশ্চিন্ত হওয়ার উপায় নেই, হাতের পরিচ্ছন্নতা ও সামাজিক দূরত্ব আবশ্যক। আবার ফুসফুসের কার্যক্ষমতার পরবর্তী অবস্থা নির্ভর করবে রোগী কোন পরিস্থিতি থেকে রোগ মুক্তি পেয়েছেন এবং ততক্ষণে কতটুকু ক্ষতিসাধন হয়ে গেছে তার ওপর।”
ভারতের শ্রী বালাজি মেডিকল ইনস্টিটিউট’য়ের ‘রেস্পিরাটরি মেডিসিন’ বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরামর্শদাতা জ্ঞানদিপ মণ্ডল বলেন, “যে রোগী তীব্র শ্বাসকষ্টের শিকার হয়েছেন এবং ‘ভেন্টিলেটর’ ব্যবহার করতে হয়েছে, তার ফুসফুসের ভবিষ্যত কার্যক্ষতা কমে যাওয়া আশঙ্কা বেশি। দৈনন্দিন কাজ করতে তার সমস্যা হতে পারে।”
সূত্রঃ বিডিনিউজ