নেফারতিতি আর বেসুরা দাঁড়কাক
নেফারতিতি তোমার ঐ নগর আজ
ছেয়ে আছে যান্ত্রিকতার বিষণ্ণতায়,
আমি আর হেঁটে বেড়াই না আজ
তোমার নগরের সেই রাস্তায়।
নেফারতিতি এখনো কী তুমি
ভেজা চুল শুকাও বারান্দায়,
তোমার জন্য রক্ত গোলাপ নিয়ে কী
কেউ আমার মতো রোজ দাঁড়ায়?
তোমার সব স্মৃতি ছেড়ে আজ বহুদূর
তবু অন্ধকারে আজও আমাকে ভাবায়,
ব্যস্ততার সব সুর আজও
অজানা কারণে তোমাতে হারায়।
মনের সেই সঙ্গীহারা দাঁড়কাক আজও
একাকী তোমার নগরে উড়ে-বেড়ায়,
তবু পারেনি আজও বাসা বাঁধতে
নেফারতিতি তোমার মনের কৃষ্ণচূড়ায়।
কৃষ্ণচূড়ার রক্তাক্ত পাপড়িতে এখনো কী
বিষণ্ণ রাজপথ ছেয়ে যায়?
নেফারতিতি এখনো কী পারোনি
চিনতে সেই পুরানো আমায়?
সেই আমায় যে তোমাকে দেখে
বেসুরা সুরে গলা ছেড়ে গান ধরতো,
সেই আমায় যে তোমাকে একপলক দেখতে
রোজ তোমার জানালায় উঁকি মারতো।
এখন আর হয়তো তোমার নগরে
আমার যাত্রার প্রতিধ্বনি তোমায় ডাকে না
তবু আজও এই বিষণ্ণ মন
কখনো তোমায় ভুলে না।
নেফারতিতি হাজার পথ ঘুরে আজও
সেই তুমিই আছো মনে
নেফারতিতি ভালোবেসে যাবো-
তোমায় সঙ্গোপনে।
এক চিলতে রোদ্দুর আর সেই নগর
শূন্যতার চার দেয়ালে
বদ্ধ আবেগ-
শাশ্বত মৃত্যুর প্রতীক্ষায় আজ
উদ্ধত নিষিদ্ধ উন্মাদনায়,
তবু এই কলুষিত অন্তর আজও-
এক মুঠো রোদ্দুর খুঁজে বেড়ায়
খুঁজে বেড়ায় শাশ্বত নিজের ছায়াকে
যা হারিয়ে গেছে উন্মাদনায়৷
চারপাশটা ছেয়ে আছে
ধোঁয়াটে মৃত্যুর ভারী বাতাসে
একটু একটু করে পাড়ি জমিয়েছি-
বহুটা পথ এই অন্ধত্বে৷
জর্জরিত হয়ে যাচ্ছে মনের আয়না-
অমলিন কিছু অভিমানে,
স্বপ্নগুলো আজ ঝরে পড়ছে
এই বিষাক্ত অন্ধত্বে৷
মৃত্যুর পথের প্রাচীরে আছি দাঁড়িয়ে
বাজিতে রেখে শেষ অভিপ্রায়,
শুধু তোমার এই নগরীতে
শেষ পদচিহ্ন রেখে যাওয়ার আশায়৷
ধীরে ধীরে ক্লান্ত হয়ে পড়ছি
এই বিষাদের উন্মাদনায়,
মিলিয়ে যাচ্ছি হয়তো এই
দুঃখ ভুলার বিলাসিতায়৷
তবে ক্লান্ত মনের যতো শেষ ছবি-
আর শেষ প্রলাপ দিয়ে গেলাম,
তোমার ব্যস্ত নগরীকে-
আর তার অবাক নিস্তব্ধতাকে৷
লেখক: ইয়াসির আবদুল্লাহ চৌধুরী