আমাদের রামু ডেস্কঃ
করোনাভাইরাসের আপাতত কার্যকর প্রতিষেধক হলো নূন্যতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং বিস্তার বা ছড়ানো প্রতিরোধ করা। সংক্রামক তথা ছোঁয়াচে হওয়ায় করোনাভা্ইরাস পৃথিবীর দেশে দেশে মহামারি আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশও এই আক্রান্ত তালিকার বাইরে নয়।
করোনাভাইরাস ছড়ানো কিংবা আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে মানুষকে ঘরে রাখার চেয়ে আপাতত উত্তম পন্থা আর নেই। তাই গোটা বিশ্ব এই ‘ঘরে থাকা’ পদ্ধতি বাধ্যতামূলকভাবে মানার চেষ্টা করছে। আমাদের দেশে এই ফর্মূলা আপাতত ভাল কাজ দিচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে মানুষ এখনো পুরোপুরিভাবে তা গ্রহণ করতে পারছেননা। অনেকে ঘরে থাকার নীতি মেনে চলার সুযোগ থাকলেও খেয়ালীপনার কারণে তা লঙ্গন করছেন। একপর্যায়ে সিভিল প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে সামরিক বাহিনীকে সংযুক্ত করতে হয়েছে।
সারাদেশ জুড়ে হয়তো স্থানীয় সিভিল প্রশাসন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। রামু উপজেলার নির্বাহী অফিসার প্রনয় চাকমাও বসে নেই। দিবারাত্রি সমানতালে খেটে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি তিনি রামুবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাঁর ফেইসবুকে একটা স্ট্যাটাস দেন। পাঠকদের জ্ঞাতার্থে তা হুবহু তুলে ধরা হলঃ
আমি প্রনয় চাকমা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, রামু করোনাকালের এই ষাটতম দিনেও মাঠে-ঘাটে চষে বেড়াচ্ছি, যাচ্ছি প্রতিটি মানুষের দুয়ারে। সচেতন করছি, ত্রাণ দিচ্ছি। যার বাসায় অন্ন নেই তার বাসায় নিজে অন্ন দিয়েছি। এটি আমার গল্প। জীবনের তরে আমার জীবন উৎসর্গ করলাম। আমি মানুষটা এমনই।
এবার আসি উপজেলা প্রশাসন, রামুর কথায়। এটি আমার সংসার। আমি এই সংসারের ব্যবস্থাপক। আমার সংসারে উপজেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীকে নিয়ে করোনাকালের এই সংকট মোকাবেলায় রাত-দিন কাজ করছি। আমরা সবাই রামুরই। কারণ আমরা রামুকে ভালোবাসি, রামুর মানুষকে ভালোবাসি এবং ভালোবাসব। আর ভালোবাসি বলেই এখনো আছি এবং থাকবো।
এখন আসি রামুর আপামর মানুষের কথায় যারা আমার এবং আমাদের সংসারের মূল কেন্দ্র। যাদেরকে নিয়ে আমরা রচনা করি আমাদের সাফল্য গাথা। করোনা সংকট শুরু হওয়ার সময় থেকেই রামুর সচেতন মানুষ আমাকে এবং আমার সংসারকে বেগবান করেছেন এবং করছেন বিভিন্ন তথ্য দিয়ে যাতে রামুর আপামর জনসাধারণ করোনাকে চিনে এবং জানে। আমি এবং আমার উপজেলা প্রশাসন সমর্থ হয়েছি করোনাকালের ৫০ তম দিনেও কোন করোনা পজিটিভ রোগী আমাদের রামুতে সনাক্ত হয়নি। এখানেই আমাদের সাফল্য গাথা। আর একজন যিনি হয়েছেন তিনি তো সনাক্ত হওয়ার একদিন আগে রামুতে আসছেন।
আর এখন আসি ত্রাণের কথায়। মাননীয় সাংসদ, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনাক্রমে ১১ ইউনিয়ন পরিষদকে সাথে নিয়ে অসহায়-দুঃস্থ মানুষের দুয়ারে দুয়ারে আমরা এখনো ত্রাণ পৌছাচ্ছি। আমরা আমাদের সবকিছু নিয়ে এই সংকটকে মোকাবেলা করছি এটি আমাদের প্রত্যয়। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাংগালি জাতির পিতা বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ০৭ ই মার্চের সেই ভাষণ আমাদের প্রেরণা। এই যুদ্ধে আমরা সফল হবোই।
পরিশেষে আসি টমটম, সিএনজি বা মাহিন্দ্র এর কথায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন, রামুর বিরুদ্ধে কিছু সিএনজি, টমটম বা মাহিন্দ্র এর চাকা পাংচার হওয়ার কিছু ছবি দিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আপনাদের জ্ঞাতার্থে বলতে চাই আমরা এসব শ্রমজীবী মানুষের পাশে থেকে তাদেরকে আমাদের নিজেদের ঘাম ঝরানো সংগ্রহকৃত নগদ টাকা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ উপহার প্রদান করেছি। মাননীয় সাংসদ, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের পরামর্শ ও নির্দেশনায় আমরা কাজ করছি যেগুলোর তথ্য উপাত্ত আমাদের হাতে ছবিসহ প্রমাণিত। আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। এদেশের মাটি ও মানুষের ঘামের টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে আপামর মানুষের সেবায় নিজেদেরকে আত্মনিয়োগ করেছি। ক্ষমতার দাপট দেখাতে নয়, নিজেদেরকে আপামর মানুষের সেবায় সপে দিতে। আমাদের পাশে থাকুন, দেখুন করোনার এই সংকটে আমরা কিভাবে কাজ করছি।
উপজেলা প্রশাসন, রামু সবসময় রামুর জনগণের পাশে আছে, থাকবে। আমরা কর্মী, মাঠের শ্রমিক। মাঠেই থাকবো। দয়া করে কেউ অপপ্রচার করবেন না। অপপ্রচারকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।