অনলাইন ডেস্কঃ
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে রাজধানীসহ সারাদেশে বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সরকারের নির্দেশে গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সামাজিক অনুষ্ঠান বিয়ে হচ্ছে না। ফলে আইনমন্ত্রণালয়ের অধীনে সারাদেশে থাকা সাড়ে সাত হাজারের বেশি নিকাহ রেজিষ্ট্রার (কাজী) কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় তাদের পয়ত্রিশ হাজার পরিবারের এখন দুর্দিন চলছে। বিয়ের কাজীদের প্রণোদনা তহবিল গঠনের জন্য ইতিমধ্যে সরকারের কাছে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ চাওয়া হয়েছে।
নিকাহ রেজিস্টাররা জানিয়েছেন, একটি ওয়ার্ড কাজী অফিসে প্রতিমাসে গড়ে ৩০-৪০টি বিয়ে পড়ানো হয়। মহামারি কোভিড-১৯ এর কারণে সরকারি সব অফিস-আদালত বন্ধের পাশাপাশি সব ধরনের নিকাহ ও তালাক রেজিস্টি (নিবন্ধন) বন্ধ রাখা হয়েছে। অলিখিত লকডাউনের কারণে বিয়ে অনুষ্ঠান যেন অবান্তর ও অপ্রাসঙ্গিক ব্যাপার।
তারা বলেন, কাজীরা নিকাহ ও তালাক রেজিস্টারের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আদায় করে থাকেন। বর্তমানে দেশে দুর্যোগের পরিস্থিতিতে তাদের আর্থিক টানাাপোড়েন চলছে। সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী বর ও কনে পক্ষ কেউই এখন বিয়ে করছেন না। প্রধানন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সমাজ থেকে বাল্য বিয়ে কঠোরভাবে প্রতিরোধ করায় বিয়ের পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার সমিতির মাওলানা কাজী খলিলুর রহমান সরদার সমকালকে বলেন, যাদের একমাত্র অবলম্বন নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রি করা, তারা আজ ধুকে ধুকে মরার উপক্রম। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেভাবে কাজীদের মর্যাদা দিয়ে লালন-পালন করেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আমাদের দিকে আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন বলে প্রত্যাশা করি।
সমিতির মহাসচিব কাজী মো. ইকবাল হোসেন সমকালকে বলেন, গত দেড়মাস ধরে আমরা সবাই বসা। করোনাাইরাসের কারণে এখন সম্পূর্ণভাবে বিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ফলে অফিস ভাড়া ও কর্মচারিদের বেতন দেওয়া যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, সারাদেশে ৭ হাজার ৭২৬ জন নিকাহ রেজিষ্টার ও তাদের পরিবারসহ ৩৫ হাজার মানুষের রুটি-রুজি বন্ধ রয়েছে। সরকার ঘোষিত প্রণোদনা তহবিল থেকে ৫০০ কোটি টাকা সুদমুক্ত ঋণ পাওয়া গেলে স্বল্প লাভে কাজীদের মধ্যে তা বন্টন করা হবে। গত ২৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্টার সমিতির পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত ঋণের আবেদন দাখিল করা হয়েছে।
সূত্রঃ সমকাল