প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষুঃ
শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা আজ। বিশ্ববৌদ্ধদের প্রধান ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা। মূলত এটি বৈশাখী পূর্ণিমা তিথি। এদিনে রাজকুমার সিদ্ধার্থের জন্ম, বুদ্ধত্বলাভ এবং মহাকারুণিক বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ প্রাপ্তি এই তিনটি অনন্য ঘটনা এই একই পূর্ণিমা তিথিতে সংঘটিত হয়েছিল। তাই বিশ্বময় বৈশাখী পূর্ণিমা ত্রিস্মৃতি বিজড়িত শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত।
বৌদ্ধরা এদিনে বুদ্ধপূজা দান, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, ধুপ পূজা, পুষ্প পূজা, পিণ্ডদান, অষ্টশীল গ্রহণ, ধর্মদেশনা শ্রবণ, মৈত্রী ভাবনা অনুশীলন সহ বিভিন্ন পুণ্যকর্ম সম্পাদনে রত থাকেন। বিহারে বিহারে শোভা পায় জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা। বৈচিত্র্যময় আলোকসসজ্জায় আরো দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠে বিহারগুলো।
দিনটির সম্মানে বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা, পরিষদ, দলমত নির্বিশেষে কোথাও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী, হাসপাতালের দুস্থ রোগীদের মাঝে উন্নত খাবার পরিবেশন এবং শান্তি শোভাযাত্রার আয়োজন করে থাকে।
বিহারে বিহারে অনুরণিত হতে শোনা যায় দেশ ও বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনার কণ্ঠস্বর। দিকে দিকে জাগে শুচিতা।
এবছর এসব কর্মসূচীর কিছুই পালন করা হচ্ছেনা। অনাড়ম্বর এবং ঘরোয়া পরিবেশে পালিত হচ্ছে এবারের বুদ্ধপূর্ণিমা। করোনাকালের এ সময়ের বুদ্ধপূর্ণিমাকে ঘরেই বুদ্ধপূজা, প্রদীপ পূজা, ধুপ পূজা, পুষ্প পূজা দান করে পালন করছেন বৌদ্ধরা। খুব সীমিত সংখ্যক নর-নারী বিহারে আসছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যারা আসছেন তারা পরক্ষণেই ঘরমুখী হয়ে যাচ্ছেন। বিহার গুলোতে আগের সেই চিরচেনা রূপ এবারের বুদ্ধপূর্ণিমায় নেই।
এদিকে শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, বুদ্ধবর্ষ গণনাকাল শুরু হয় গৌতম বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ লাভের পর থেকে। খ্রিস্টপূর্ব ৫৪৪ অব্দে গৌতম বুদ্ধ মহাপরিনির্বাণ প্রাপ্ত হন। সে হিসাবে আজ ৬ মে ২০২০ খ্রিস্টাব্দ বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ লাভের (৫৪৪+২০২০) ২৫৬৪ বছর পূর্ণ হল। বৌদ্ধরা পুরাতন বুদ্ধবর্ষকে বিদায় জানিয়ে নতুন বুদ্ধবর্ষ ২৫৬৪ বুদ্ধবর্ষকে স্বাগত জানাবেন আজকে।