অনলাইন ডেস্কঃ
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বের হচ্ছেন না।
তাই বলে রাষ্ট্রীয় কোনো কাজ থেমে নেই। গণভবনে থেকেই শেখ হাসিনা সামলাচ্ছেন দাপ্তরিক কাজ, সভা করছেন, ভিডিও কনফারেন্সে নিচ্ছেন মাঠ পর্যায়ের খোঁজ, দিচ্ছেন নানা নির্দেশনা।
কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারী রূপ নিয়ে বাংলাদেশে সংক্রমণ ঘটানোর পর গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। গণপরিবহনও বন্ধ করে সবাইকে বলা হয় ঘরে থাকতে। ওই ছুটির মেয়াদ ইতোমধ্যে ১৬ মে পর্যন্ত বেড়েছে।
এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী তার ত্রাণ তহবিলে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহায়তা দিতে এলে তাদের সঙ্গে সরাসরি দেখা না করে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন।
সেদিন তিনি বলেছিলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে সরাসরি উপস্থিত থেকে আপনাদের কাছ থেকে দরিদ্র মানুষের সেবায় দেওয়া অনুদান গ্রহণ করতে পারলাম না।
“যেহেতু আমরা নিজেই দিয়েছি সকলকেই ঘরে থাকার নির্দেশ, সেটা ভঙ্গ করা উচিৎ না।”
তবে এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন, বলেন তার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
তিনি বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই ভাইরাস মোকাবেলায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সারাদেশে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরও নির্দেশনাও দিয়ে যাচ্ছেন।”
বৃহস্পতিবার গণভবনেই বসে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক, যাতে সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক (প্রশাসন) আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক থেকে শুরু করে অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়েও প্রয়োজনীয় সভা নিয়মিত করে যাচ্ছেন।
“এছাড়াও তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করছেন।”
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্য বিষয়ক নির্দেশনা মেনে কাজ চলছে বলেও জানান আহসান কিবরিয়া।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী গত ৩১ মার্চ ৬৪ জেলার জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন দপ্তরের মাঠ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে একযোগে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে সরাসরি কথা বলেন।
গত ৩৩ দিনে প্রধানমন্ত্রী ছয় বার ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে সংযুক্ত হয়ে ৫৮টি জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন বলে জানান মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।
তিনি বলেন, “করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিয়ের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম সমন্বয় করে আসছেন।”
প্রধানমন্ত্রী সঙ্কট মোকাবেলায় ১ এপ্রিল ৩১টি, ১৬ এপ্রিল ১০টি, ২০ এপ্রিল ১৩টি এবং ২৭ এপ্রিল ১০টি নির্দেশনা দেন বলেও জানান কায়কাউস।
এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের আয়োজনে ‘এনহ্যান্সিং রিজিওন্যাল কো-অপারেশন ইন সাউথ এশিয়া টু কমব্যাট কোভিড-১৯ রিলেটেড ইমপ্যাক্ট অন ইটস ইকোনোমিকস’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে গণভবন থেকে যোগ দেন শেখ হাসিনা।
ওই সম্মেলনে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এ পৃথিবী শতবছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সঙ্কটে পড়েছে মন্তব্য করে বিশ্বকে এক হয়ে তা মোকাবেলা করার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে ১৫ মার্চ কোভিড-১৯ ঠেকানোর লড়াইয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে সার্ক নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকেই যোগ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
সূত্রঃ বিডিনিউজ