খালেদ শহীদ, রামুঃ
রামুতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে লকডাউন হচ্ছে চৌমুহনী। ২৮ জুন রোববার থেকে রেডজোনের আওতায় ১৪ দিনের লকডাউন ঘোষনা করা হবে। উপজেলা প্রশাসনের এক সভায় নীতিগতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের চৌমুহনী স্টেশনকে কেন্দ্র করে, পশ্চিমে রামু বাইপাস ফুটবল চত্ত্বর, উত্তরে বাইপাস চত্ত্বর, পূর্বে চেরাংঘাটা হয়ে জাদীপাড়া ও রামু ফকিরা বাজার, দক্ষিণে তেমুহনী স্টেশন পর্যন্ত রেডজোনের আওতায় লকডাউন কার্যকর করা হবে, উপজেলা প্রশাসন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সোমবার (২২ জুন) সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন, কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল।
প্রধান অতিথি সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন, রামুতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ দ্রুতগতিতে বেড়ে যাচ্ছে। এ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাক্স ব্যবহারের বিকল্প নেই। রামুতে করোনার নিয়ন্ত্রণ করতে, উপজেলার প্রাণকেন্দ্র ফতেখাঁরকুলের চৌমুহনীকে ‘রেডজোন’ ঘোষণা দিয়ে লকডাউন করতে হবে।
তিনি বলেন, সম্মিলিত উদ্যোগে করোনার সংক্রমণ মহামারিতে রূপ নেওয়ার আগেই আমাদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ফতেখাঁরকুলের চৌমুহনী ষ্টেশন ব্যবসা ও প্রশাসনিক যাতায়াতের কেন্দ্রস্থল। তাই চৌমুহনী স্টেশন কেন্দ্রীয় রেডজোনের আওতায় লকডাউন কার্যকর করা হবে।
সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন, যারা করোনা ভাইরাসের উপসর্গে বা জ্বর নিয়ে অসুস্থতা বোধ করছেন এবং নমুনা পরীক্ষা দিয়েছেন রিপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছে, আপনারা সবাই কোয়ারেন্টাইন মেনে চলুন।
এমপি কমল স্থানীয়ভাবে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার স্থাপন করতে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের প্রতি অনুরোধ জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা’র সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সভায় বক্তৃতা করেন, রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া, রামু থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফসানা জেসমিন পপি, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম, রামু চৌমুহনী বণিক সমবায় সমিতি’র সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল আলম চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া, রামু প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি খালেদ শহীদ ও নুরুল ইসলাম সেলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন রামু উপজেলার সুপারভাইজার মো. সাইফুদ্দিন খালেদ, রামু কেন্দ্রীয় কালী মন্দিরের পুরোহিত সুবির ব্রাহ্মণ চৌধুরী বাদল, উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের সম্মানিত ইমাম।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেন, রামুকে করোনা মুক্ত করতে পরিকল্পিত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। জীবনে তাগিদে বাড়ি থেকে বের হতে হয় আমাদের। অতি জরুরী হলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়, স্বাস্থ্য বিধি কঠোরভাবে মেনে চলাফেরা করি।
তিনি বলেন, ঈদের পরে রামুতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেশী হয়েছে। রামু স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যকর পদক্ষেপে অধিক নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করার কারণে সংক্রমিত বেশী দেখা যাচ্ছে। অচিরেই রামুতে সংক্রমণ কমে আসবে।
স্বাস্থ্য বিভাগকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়ে ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেন, রামু উপজেলায় ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এ নিয়ে আতংকিত হওয়ার কারণ নেই। সচেতনভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাস্থ্য বিভাগকে সহযোগিতা করুন। খুব কম সময়ে রামু করোনা ভাইরাস মুক্ত হবে।
সভায় রামু উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, রামু ফকিরা বাজার ব্যবসায়ী সমিতি’র সভাপতি মো. নুরুল আলম, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, পরিবহণ ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে রামুর প্রশাসনিক ও ব্যবসার কেন্দ্রস্থল চৌমুহনী স্টেশনকে রেডজোন ঘোষনা করে লকডাউন করার নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একটা রোড়ম্যাপের আওতায় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনে নির্দেশনায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে শীঘ্রই।
ইউএনও প্রণয় চামমা বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল মহোদয়ে সার্বিক পরামর্শক্রমে রেডজোন-লকডাউন পরিকল্পনাটি গ্রহণ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতাকর্মী সহ সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা দরকার।