খালেদ শহীদ, রামুঃ
রামুতে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, শিক্ষার্থী, ঔষধ ব্যবসায়ী সহ নতুন করে আরও ৮ জনের করোনা পজেটিভ হয়েছে। এ পর্যন্ত রামুতে ২০৭ জন করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে ১০৯ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ স্থানীয় বাসিন্দা এবং ৯৮ জন বিশেষ বাহিনীর সদস্য বলে জানিয়েছে রামু স্বাস্থ্য বিভাগ।

জানা গেছে, রোববার নতুন করে রামুতে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম, রামু চৌমুহনী বণিক সমবায় সমিতি’র অর্থ সম্পাদক ঔষধ ব্যবসায়ী চম্পক বড়ুয়া জুয়েল, ফিলিং স্টেশন মালিক নুরুল আলম সিকদার, এনজিও কর্মী অয়ন বড়ুয়া, শিক্ষার্থী আবু ইউসুফ চৌধুরী নূর, বয়োবৃদ্ধ হৃদয় শর্মা, বক্তার আহমদ, গৃহবধূ পারভিন আকতার।
রামুর সচেতন মহলের অভিমত, রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। রামুতে সংক্রমণ রোধ করতে দ্রুত ফতেখাঁরকুলে রেডজোন-লকডাউন কার্যকর করতে হবে।
রামু উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রিয়াজ উল আলম কোভিট ১৯ আক্রান্ত হয়ে হোম আইসোলেশনে আছেন। বর্তমানে তিনি শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন রামু উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া আমাদের রামু ডটকম কে বলেন, উপজেলার এগার ইউনিয়নের মধ্যে ফতেখাঁরকুলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি। রামুতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে, উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নে লকডাউন কার্যকর করলে ভাল হবে। তবে সেটার সুফল পেতে সবার সহযোগিতা দরকার। প্রশাসন, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সম্মতিতে লকডাউন করা যেতে পারে।
রামু উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২৮ জুন) নতুন আক্রান্ত ৮ জন সহ রামুতে ২০৭ জন করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। তৎমধ্যে ফতেঁখারকুল ইউনিয়নে ৫৮ জন, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নে ১৩ জন, রাজারকুল ও গর্জনিয়া ইউনিয়নে ৬ জন করে, খুনিয়াপালং ইউনিয়নে ৪ জন, কাউয়ারখোপ, চাকমারকুল ও ঈদগড় ইউনিয়নে ৩ জন করে, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ও রশিদনগর ইউনিয়নে ২ জন করে, কচ্ছপিয়া ইউনিয়নে ১ জন করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। এ ছাড়াও ১৩ জন পুলিশ সদস্য, ৮৫ জন RAB সদস্য ও ৮ জন স্বাস্থ্য কর্মী সংক্রমিত হয়েছে।
ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেন, কঠোর ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সামাজিক দূরত্ব (নুন্যতম ৩ ফুট) মেনে চলা, মাস্ক পরা, সাবান দিয়ে বার বার হাত ধোয়ার নিয়ম মেনে চলার বিকল্প নেই। অপ্রয়োজনীয় কারণে বাসাবাড়ি থেকে বের না হওয়া এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। বাজারে মাস্ক ছাড়া কাউকে চলাফেরা করতে না দেওয়া।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের নমুনা দেয়ার পরে, নমুনা প্রদানকারী ব্যক্তি রিপোর্ট পাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বাসাবাড়িতে অবস্থান করতে হবে। হোম কোয়ারেন্টাইন কঠোরভাবে মেনে চলতে। এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকেই দায়িত্ববান হয়ে কাজ করতে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে, রামুতে করোনার নিয়ন্ত্রণ করা অনেকখানি সম্ভব। তিনি বলেন, যারা নমুনা দেয় তাদের নমুনার ফলাফল আসার আগ পর্যন্ত বাসাবাড়িতে থাকার জন্য সতর্ক করতে হবে। মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব সবখানে মেনে চলতেই হবে। বিশেষ করে ফতেখাঁরকুলের চৌমুহনী স্টেশনে আগত ও কর্মরত মানুষ কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করলে, রামুতে করোনার সংক্রমন কমে যাবে দ্রুত।