স্টাফ রিপোর্টার :
নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত একই কর্মস্থলে থেকে বাইশারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসাইন উপস্থিতি খাতায় কারসাজিসহ নানা উপায়ে উপবৃত্তির বিতরণে অনিয়ম করছেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের টাকা কম দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ৫৬০ জন শিক্ষার্থীর জন্য মোট ৫ লক্ষ ৮২ হাজার ৫ শত টাকা বরাদ্ধ হয়। গত ২০ জুলাই এসব উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করা হয়। এ নিয়ে অভিভাবক ছৈয়দ নুর ও আব্দুল মোনাফ এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, তাঁর দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন ২য় শ্রেণি ও অন্যজন ৫ম শ্রেণিতে পড়ে। তারা নিয়মিত স্কুলে যায় এবং ক্লাসেও নিয়মিত হাজির থাকে। গত বছরের জুন থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এক বছরের টাকায় তাঁর শিশুদের দেওয়া হয়েছে ১৫শত টাকা।
অভিভাবক আব্দুল মান্নান জানান, তাঁর সন্তান এক বছরে ১২ শত টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে ৮ শত টাকা। আব্দুস সালাম বলেন, তার দুই শিক্ষার্থী থাকলেও দেওয়া হয়েছে ১ হাজার টাকা।
গ্রামাঞ্চলের সাধারণ অভিভাবকদের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত করলেও সচেতন অভিভাবকদের পুরো টাকা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু আহমদ আমাদের রামু ডটকমকে জানান, উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তিনি কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু শাফায়াৎ মুহম্মদ শাহে দুল ইসলাম আমাদের রামু ডটকমকে জানালেন, উপবৃত্তির টাকা বিতরণে অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমানিত হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক কামাল হোছাইন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘অভিভাবকরা না বুঝেই আমার উপর এ মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন’। স্কুলের হাজিরা খাতা দেখে যে সকল শিক্ষার্থীর ৮৫% হাজিরা রয়েছে তাদের তালিকা তৈরী করে আমরা ব্যাংকে টাকা চাহিদাপত্র পাঠাই। চাহিদাপত্র অনুযায়ী শিক্ষার্থীর অভিভাবকের হাতে টাকা তুলে দেওয়া হয়।
এদিকে কামাল হোসাইনকে সম্প্রতি উপজেলার শ্রেষ্ট শিক্ষক ঘোষনা করায় শিক্ষক মহলের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রাপ্ত পয়েন্টসহ স্কুলের ফলাফল বিবেচনায় শ্রেষ্ট শিক্ষক নির্বাচন করার নিয়ম থাকলেও উপজেলা শিক্ষা অফিসার তা মানেননি। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের ঘনিষ্টজন হিসেবে কামাল হোসাইনের পরিচিতি থাকায় বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে প্রায় সময় পার পেয়ে যান বলে সচেতন মহলের দাবি।