ক্রীড়া ডেস্কঃ
নকআউট পর্বের টিকেট আগেই মেলায় দলে ঢালাও পরিবর্তন আনলেন কোচ। তবে ইতালির পারফরম্যান্সে তা তেমন কোনো প্রভাব ফেলল না। ওয়েলসের বিপক্ষেও আধিপত্য ধরে রেখে প্রত্যাশিত জয় তুলে নিল রবের্তো মানচিনির দল।
রোমের স্তাদিও অলিম্পিকোয় রোববার রাতে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ‘এ’ গ্রুপের শেষ রাউন্ডে ১-০ গোলে জিতেছে ইতালি। দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া ওয়েলস হেরে গেলেও পরের ধাপে খেলা অবশ্য নিশ্চিত হয়েছে তাদের।
ইতালির জয়ের নায়ক মাত্তেও পেস্সিনা। এ মাসের শুরুতে যার এখানে খেলারই কথা ছিল না। মানচিনির প্রথম ঘোষিত দলে ছিলেন না তিনি, পরে মিডফিল্ডার স্তেফানো সেন্সির চোটে ডাক পড়ে ২৪ বছর বয়সী এই ফুটবলারের। আর তৃতীয় ম্যাচে এসে শুরুর একাদশে সুযোগ পেয়ে দারুণভাবে কাজে লাগালেন তিনি।
তিন ম্যাচের সবকটি জেতা ইতালির পয়েন্ট ৯। সুইজারল্যান্ডের সমান ৪ পয়েন্ট হলেও গোল পার্থক্যে এগিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ ওয়েলস। তিন ম্যচের সবকটি হেরে খালি হাতে ফিরল তুরস্ক।
মানচিনির কোচিংয়ে যেন অজেয় হয়ে উঠেছে ইতালি। ২০১৮ সালে নেশন্স লিগে পর্তুগালের বিপক্ষে হারের পর আর ওই তেতো স্বাদ পায়নি তারা। অপরাজেয় পথচলা বেড়ে দাঁড়াল ৩০ ম্যাচে। স্পর্শ করল ৮২ বছরের পুরনো নিজেদেরই রেকর্ড। ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৯ পর্যন্ত সময়ে ৩০ ম্যাচে অপরাজিত থেকে রেকর্ডটি গড়েছিল তারা।
নকআউট পর্বের আগে ছেলেদের বিশ্রাম দিতে আগের ম্যাচের শুরুর একাদশে আটটি পরিবর্তন আনেন মানচিনি। শুরুতে তারা নিজেদের গুছিয়ে নিতে একটু সময় নেয়। তবে বল দখলে ঠিকই প্রথম মিনিট থেকে আধিপত্য করে দলটি।
কিছুটা ঢিমেতালে শুরুর মাঝে ষোড়শ মিনিটে আচমকা গোল খেতে বসেছিল ওয়েলস; তবে রাফায়েল তোলোইয়ের কোনাকুনি শটে বল মাত্তেও পেস্সিনার পায়ে লেগে গোলরক্ষক বরাবর গেলে কোনো বিপদ হয়নি। সাত মিনিট পর আন্দ্রেয়া বেলোত্তির কোনাকুনি শট হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট।
২৭তম মিনিটে প্রথম কর্নার পায় ওয়েলস, তা থেকেই আসে তাদের প্রথম সুযোগ। তবে ক্রিস গান্টারের লাফিয়ে নেওয়া হেড অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে যায়। তিন মিনিট পর ইতালির ফেদেরিকো চিয়েসার দুরূহ কোণ থেকে নেওয়া শট গোললাইনে প্রতিহত হয়।
একচেটিয়া চাপ ধরে রাখা ইতালির অপেক্ষা শেষ হয় ৩৯তম মিনিটে। ডান দিক থেকে মার্কো ভেরাত্তির নেওয়া নিচু ফ্রি-কিকে দারুণ ফ্লিকে দলকে এগিয়ে নেন পেস্সিনা।
দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে ব্যবধান বাড়তে পারতো; তবে ফেদেরিকো বের্নারদেস্কির ফ্রি কিক পোস্টে লাগে। অবশ্য এখানে বেঁচে গেলেও চার মিনিট পরই বড় ধাক্কাটা খায় ওয়েলস। ইউভেন্তুস ফরোয়ার্ড বের্নারদেস্কিকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন তরুণ মিডফিল্ডার ইথান এম্পাডু।
একজন কম নিয়ে বাকি সময়ে তেমন লড়াইও করতে পারেনি ওয়েলস। ৭৫তম মিনিটে ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েও উড়িয়ে মারেন গ্যারেথ বেল। ম্যাচের শেষটা তাতে হতাশার হলেও নকআউট পর্বে ওঠার হিসেবটা পক্ষে যাওয়ায় হাসিমুখে মাঠ ছাড়ে বেল-র্যামজিরা।
ইতালির গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুমার তেমন কোনো পরীক্ষাই নিতে পারেনি ওয়েলস। পুরো ম্যাচে মাত্র তিনটি শট নেয় তারা, যার একটিই কেবল লক্ষ্যে ছিল। বিপরীতে, দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে ইতালির ২৩ শটের সাতটি ছিল লক্ষ্যে।
জাল অক্ষত রেখে ইতালির জয়ের ধারা বেড়ে দাঁড়াল টানা ১১ ম্যাচে! প্রায় তিন বছর ও টানা ৩০ ম্যাচ অপরাজিত পথচলা। দ্বিতীয় সারির একাদশ নিয়েও এমন দাপুটে পারফরম্যান্স। ইতালিয়ানদের স্বপ্ন নিশ্চয় এবার আরও বড় হবে।
সূত্রঃ বিডিনিউজ