নিজস্ব প্রতিবেদক, রামু:
কক্সবাজার-৩ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল বলেছেন, বন্যার পানি এখন নাই। কিন্ত বন্যার ক্ষত জেগে উঠেছে। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি কি হয়েছে, আমি নিজ চোখে দেখার জন্যে গ্রামে-গ্রামে গিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে ঘুরেছি। তাদের কষ্টের কথা শুনেছি, দূর্দশার নিজ চোখে দেখেছি। টানা পাঁচ দিনের প্রবল বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে রামু, কক্সবাজার সদর ও ঈদগাঁও উপজেলার অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। চারদিকে নদীর ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে কষ্ট না পায়, অগ্রাধিকার ভাবে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা হবে। সোমবার (২ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৫টায় কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের মনিলঝিল গ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি এ সব কথা বলেন।
সোমবার বিকালে আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বাঁকখালী নদী ভাঙ্গন এলাকা সহ বন্যায় বিধ্বস্ত মনিরঝিল গ্রামের চার কিলোমিটার সড়ক হেঁটে পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দূর্দশার কথা শুনেন এবং দ্রুত বাঁকখালী নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে পাথরে ব্লক ও স্পার স্থাপন এবং নদী রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে জানান। এ সময় তিনি বলেন, বন্যায় বিধ্বস্ত পূর্ব পাড়া থেকে পশ্চিম পাড়া পর্যন্ত মনিরঝিল গ্রামের প্রধান রাস্তাটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্মাণ করা হবে। ডিজিটাল সার্ভে করা হয়েছে। অচিরেই কাউয়ারখোপ-মনিরঝিল সেতু নির্মাণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
দুপুর আড়াইটায় রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে মৎস্য জেলেদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার ও ভিজিডি চাল বিতরণ করেন, কক্সবাজার-৩ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল। বিকাল সাড়ে ৩টায় ওই ইউনিয়নের ওমখালী গ্রামের আবুবক্কর পাড়ায় বাঁকখালী নদী ভাঙ্গন পরিদর্শন করেন। ত্রাণ বিতরণ শেষে এমপি কমল বলেন, বন্যা ও করোনায় বিপর্যস্ত কর্মহীন মানুষের কথা চিন্তা করে, এই সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেলে ভাতা পাঠিয়েছেন, ভিজিডি চাল দিয়েছেন। যাতে মানুষ কষ্ট না পায়।
রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি উমখালী গ্রামে আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন, তিন দিনের বন্যায় বাঁকখালী নদী ভাঙ্গনে উমখালী গ্রামের দশটি বাড়ি তলিয়ে গেছে। জরুরী ভিত্তিতে এই স্থানে ব্লক বা স্পার স্থাপন করা না হলে, আরও অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলেছি, এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্যে। পানিউন্নয়ন বোর্ড জরুরী বিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে, আামি তাদের তাগাদা দিচ্ছি।
এমপি কমল বলেন, নদী ভাঙ্গনে আরও অনেক জায়গায় বহু মানুষ ঘর হারিয়েছেন। রামু, কক্সবাজার সদর উপজেলা এবং ঈদগাঁও উপজেলায় নদী তীরবর্তী যে সব মানুষ ঘর হারিয়েছেন, সেই সব গৃহহীনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার বাড়ি দেয়া হবে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দিয়ে বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নদী ভাঙ্গনে গৃহহীনদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার ‘বাড়ি নির্মাণ’ করে দিবেন। একই সাথে স্থানীয় বিত্তবান মানুষের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপনার অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ান। অসহায় আশ্রয়হীনদের আশ্রয় দেন। অনাহারী মানুষের মুখে খাবার তোলে দেন।
রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নে ত্রাণ বিতরণ ও বাঁকখালী নদী ভাঙ্গন এলাকা পরির্দশন সময়ে আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এমপির সাথে ছিলেন, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইউনুচ ভূট্টো, সমাজ সেবক আবুদুল্লাহ কোম্পানী, ব্যবসায়ী আমির হামজা, ছাত্র নেতা মো. আজিজ এবং মনিরঝিল গ্রামে নদী ভাঙ্গন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরির্দশন সময়ে কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ, রামু উপজেলা যুবলীগ সহ-সভাপতি ওসমান সরওয়ার মামুন, সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া, কবি এম সুলতান আহমদ মনীরি, ইউপি সদস্য জহির আহমদ, মালেক মেম্বার, তৈয়ব মেম্বার, আবদুল মালেক, বদর মিয়া, ইউনিয়ন স্বেচ্ছা সেবকলীগ সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদ, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আজিম, যুগ্ম-সম্পাদক ফেরদৌস গোলাপ, যুবনেতা ইমাম হোসেন ইমরান প্রমুখ।