গুলশানে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা নিয়ে বেইজিংয়ের তরফ থেকে কোনো উদ্বেগ আসেনি যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠকে; বরং বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে দেশটি।
সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) জ্যে ষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন। খবর বিডিনিউজের।
গুলশানের সন্ত্রাসী আক্রমণের ঘটনায় চীনা প্রতিনিধি দল উদ্বিগ্ন কিনা জানতে চাইলে সচিব বলেন, “তারা এ বিষয়ে কিছুই বলেনি। কোনোরকম উদ্বেগও প্রকাশ করেনি। তবে তারা এ দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ প্রসঙ্গ তুলে জমি অধিগ্রহণ ও জ্বালানি সরবরাহ- এ দুটি বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।”
তিনি বলেন, “প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের কাছে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে। সেই সঙ্গে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়েও আগ্রহ দেখিয়েছে।”
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার গাও ইয়ানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেয়; ঢাকায় চীনা দূতাবাসের কর্মকর্তারাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
অ্যা দিকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন।
সচিব বলেন, “ইতিমধ্যে চীনের জন্য চট্টগ্রাম বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ দিয়েছে। তাছাড়াও সরকার বিনিয়োগের জন্য যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন তৈরি করছে সেখানেও চীনা ব্যবসায়ীদের জন্য বিনিয়োগের সুযোগ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।”
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটত কমিয়ে আনতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনের প্রতিনিধি দলকে জানানো হলে তারা ঘাটতি কমিয়ে আনার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে বলেও জানান তিনি।
মেজবাহউদ্দিন বলেন, “বাংলাদেশ বর্তমানে প্রায় ৪ হাজার ৭০০ আইটেম বাংলাদেশি পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়। বৈঠকে নতুন করে ১৭টি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, তামাক, সিনথেটিক ফাইবার, চামড়াজাত পণ্য, সিল্ক ওয়াস্টসহ আরো বেশ কিছু পণ্য।”
বাণিজ্যে র অংশ হিসেবে চীনের ভিসা সহজিকরণে প্রতিনিধি দল সুপারিশ করবে বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে, যোগ করেন তিনি।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মেজবাহউদ্দিন বলেন, “বৈঠকে বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও মিয়ানমার নিয়ে প্রস্তাবিত বিসিআইএম করিডোর নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টিতে তারা বেশ আগ্রহী।”
বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে প্রতি তিন মাস অন্তর বৈঠকের বিষয়ে দুই দেশের প্রতিনিধিরা একমত পোষণ করেন।
অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে ইআরডি সচিব বলেন, “চীনের সঙ্গে চুক্তির জন্য ৫/৬টি প্রকল্প প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। শিগগির এসব প্রকল্পের চুক্তি হতে পারে।”