আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
শ্রীলঙ্কার সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসের দুবাই যাওয়ার চেষ্টা পণ্ড হয়ে গেছে যাত্রীদের আপত্তি আর বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মীদের বাধার কারণে।
এক দশকের বেশি সময় শ্রীলঙ্কা শাসন করে আসা রাজাপাকসে পরিবারে সদস্য বাসিল দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের ছোট ভাই। প্রবল গণবিক্ষোভের মধ্যে গোটাবায়া ইতোমধ্যে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সঙ্কটের জন্য রাজাপাকসে পরিবারকে দায়ী করে গত কয়েক মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে শ্রীলঙ্কার মানুষ।
শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিরর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দুবাই যাওয়ার জন্য সোমবার রাত ১২টায় কলম্বোর বন্দরনায়েকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান বাসিল। তার ফ্লাইট ছাড়ার কথা ছিল রাত সোয়া ৩টায়।
কিন্তু যাত্রীরা তাকে চিনে ফেললে হই চই শুরু হয়। এরপর সিল্ক রুট প্যাসেঞ্জার ক্লিয়ারেন্স টার্মিনালে দায়িত্বরত ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা সাবেক এই মন্ত্রীর দেশত্যাগের চেষ্টা আটকে দেয়।
‘চেক ইন’ করতে না পেরে বাসিল রাজাপাকসে পরে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যমগুলো। বিমানবন্দরে বাসিলকে দেখার পর যাত্রীদের বিক্ষোভের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে নিউজঅয়্যার লংকা।
এদিকে বাসিলকে নিয়ে উত্তেজনার পর মধ্যরাতে বিমানবন্দরের ভিআইপি ডিপারচারে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম আদাদেরানা।
বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কেএএসএস কানুগালা বলেছে, কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই তাদের সরিয়ে নেওয়ার ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কয়েক মন্দোলন চালিয়ে যেতোস ধরে টানা বিক্ষোভের মধ্যে গত মে মাসে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন বাসিলের বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে। বিক্ষোভকারীরা তাতে সন্তুষ্ট ছিলেন না, তারা প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে আ থাকেন।
এরমধ্যে শনিবার রাজধানী কলম্বোতো রীতিমত লঙ্কাকাণ্ড ঘটে যায়। ঝড়ো বিক্ষোভে হাজারো মানুষ গোটাবায়ার বাসভবনে ঢুকে পড়ে, আগুন ধরিয়ে দেয় প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে।
এই পরিস্থিতিতে পদত্যাগে রাজি হন গোটাবায়। নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জন্য ২০ জুলাই তারিখ ঘোষণা করেন স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে।
বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখল করে নেওয়ার আগের দিনেই বিপদ বুঝে সরে পড়েছিলেন গোটাবায়া। গত তিন দিনে তার তরফ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি। তিনি কোথায় আছেন, সে বিষয়েও সরকারিভাবে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছিল, শ্রীলঙ্কার উপকূলে নৌবাহিনীর একটি জাহাজে অবস্থান করছেন গোটাবায়া রাজাপাকসে। তিনি এখনও শ্রীলঙ্কায় আছেন এবং মঙ্গলবার সকালে তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে ডেইলি মিরর খবর দিয়েছে।
পত্রিকাটি লিখেছে, গোটাবায়া রাজাপাকসে ইতোমধ্যে তার পদত্যাগপত্রে সই করেছেন এবং সেখানে ১৩ জুলাইয়ের তারিখ দেওয়া আছে। নিয়ম অনুযায়ী সেটা স্পিকারের কাছে জমা দেওয়া হবে এবং তিনিই বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগপত্র পাওয়ার কথা ঘোষণা করবেন।
সূত্র : বিডিনিউজ