হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী, রামু থেকে :
প্রেম মানে না জাত-কুল, প্রেম মানে না ধর্ম বর্ণ, এ যেন চিরন্তন সত্য। তারই প্রমাণ মিললো কক্সবাজারের রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের পিংকি-শহিদুল্লাহর প্রেম কাহিনীতে। তাদের এই প্রেম ঠিক যেন লাইলি-মজনুর প্রেমকেও হার মানায়।
পিংকির পুরো নাম পিংকী রাণী দাশ (২১)। সে ইউনিয়নের দাশপাড়া গ্রামের রাখাল চন্দ্র দাশের মেয়ে। স্থানীয় কচ্ছপিয়া উচ্চবিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়া লেখা করা পিংকি পাশ্ববর্তী এলাকার মুসলিম পরিবারের মনির আহমদ সওদাগরের ছেলে মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর সঙ্গে গত চার বছর ধরে মন দেয়া-নেয়া চলে আসছে তার। দুজন দুই ধর্মাবলম্বী হলেও তাদের প্রেমে ফাটল সৃষ্টি হয়নি বিন্দু পরিমাণও।
]তবে মেয়ের পরিবার বিষয়টি জানলেও জানতো না ছেলের পরিবার। কিন্তু উভয় পরিবারকে না জানিয়ে প্রেমিক জুটি সিদ্ধান্ত নেয় পালিয়ে যাবে অজানার উদ্দেশ্যে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত রোববার ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে পূর্বতিতার পাড়াস্থ হরিমন্দিরে চলামন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে (মহোৎসব) যাওয়ার কথা বলে মেয়েটি বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এর পর প্রেমিক শহিদুল্লাহর সঙ্গে চলে যায় চট্টগ্রাম শহরে।
গত মঙ্গলবার সকালে শহিদুল্লাহ বিষয়টি পরিবারকে অবগত করেন। প্রেমিক পিংকি তখন ছেলের বাবাকে বলেন ধর্ম ও পরিবার ত্যাগ করে হলেও সে বিয়ে করতে প্রস্তুত।
পরে রাত সাড়ে ৯টায় পিংকি (বর্তমান নাম জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নি) নিয়ম মতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মধ্যম হালিশহর কাজী অফিসে উপস্থিত হয়ে কাজী শাহাজাহানের মাধ্যমে ৬ লাখ ১ টাকার দেনমোহরে শুভ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
এসময় চট্টগ্রামে অবস্থানরত শহিদুল্লাহর প্রতিবেশী কায়সার ও চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজীবি বাবুল কুমার রায় উপস্থিত ছিলেন। এসবের সত্যতা এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন শহিদুল্লার ছোট ভাই এরশাদ উল্লাহ।
এদিকে মুঠোফোনে প্রেমিক শহিদুল্লাহ জানিয়েছেন, আমি এভাবে পালিয়ে পরিবারকে ছোট করতে চাইনি। বাধ্য হয়ে পালিয়ে গেছি। আমি পিংকির জন্য পৃথিবীও ছাড়তে রাজি। প্রেমিক পিংকি বলেন, আমি শহিদুল্লার জন্য ধর্ম ত্যাগ করেছি। প্রয়োজন হলে পরিবারও ত্যাগ করতে প্রস্তুত। বর্তমানে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নিজের ইচ্ছায় শহিদুল্লাহকে বিয়ে করেছি। এতে আমার পরিবারের কোন আপত্তি থাকার কথা নয়। কারণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো বয়স আমার হয়েছে।