কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ড (রামু উপজেলা) সদস্য পদে হাতি প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম। তিনি পেয়েছেন ১০৪ ভোট। রামু উপজেলার এগার ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত কক্সবাজার জেলা পরিসদের ৪নং ওয়ার্ড। নির্বাচনে যোগ্যপ্রার্থী হিসেবে ফরিদুল আলমের বিজয়ে রামুবাসীর মাঝে ব্যাপক আনন্দ-উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে।
রামু উপজেলার ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার পেকুয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আরিফ ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি জানান, রামু উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলে।
নির্বাচনকে ঘিরে রামু উপজেলার প্রাণকেন্দ্র ছিল উৎসবমুখর। ভোটারদের পাশাপাশি ভোট কেন্দ্রের কাছাকাছি স্থানে উৎসুক মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো
ফরিদুল আলমের নিকটতম প্রতিদ্বদ্বী কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ (অটোরিক্সা) পেয়েছেন ২৬ ভোট এবং সাবেক কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামশুল আলম মন্ডল (তালা) ১১ ভোট, মো. মনজুরুল মোর্শেদ কাদেরী (বৈদ্যুতিক পাখা) ২ ভোট, মো. আবদুল মজিদ (টিউবওয়েল) ১ ভোট পেয়েছেন। নুরুল আবছার (ঘুড়ি) কোনো ভোট পাননি। রামু উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই ভোট কেন্দ্রে ১৪৫ ভোটের মধ্যে ১৪৪ জন ভোট প্রয়োগ করেছেন।
বিজয়ী ফরিদুল আলম বিগত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। ইউপি নির্বাচনে বিজয়ী না হলেও তিনি জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে বিজয়ী হয়ে চমক দেখিয়েছেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে, ২০২১ সাল পর্যন্ত ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ইতিপূর্বে ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০২ সাল এবং ২০০২ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত, দুই দফায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ড সদস্যের (মেম্বার) দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময়ে তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিন বছর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করেন।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ড সদস্য পদে বিজয়ী ফরিদুল আলম বলেন, আমার এ বিজয় রামু উপজেলার জরপ্রতিনিধিদের বিজয়। আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি কক্সবাজার-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল মহোদয়ের প্রতি। তাঁরে দিকনির্দেশনায় আমার বিজয়কে সুনিশ্চিত করেছে। আমি আমার নির্বাচনে শ্রম, বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়েছে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বার এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। আমি তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমি আমার দায়িত্ব পালনকালে জনপ্রতিনিধিদের সুপরামর্শে কাজ করবো।
এ ভোট কেন্দ্রে সংরক্ষিত আসন ১নং ওয়ার্ডে (রামু, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা নিয়ে গঠিত) মহিলা সদস্য পদে তছলিমা আক্তার (ফুটবল) ৮১ ভোট, আশরাফ জাহান কাজল (দোয়াত কলম) ৬৩ ভোট ও তছলিমা আকতার রোমেনা ১ ভোট পেয়েছেন। তবে টেকনাফ ও উখিয়া ভোট কেন্দ্রে এগিয়ে থাকায় সর্বোচ্চ ভোটে সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আশরাফ জাহান কাজল।
এছাড়াও এ ভোট কেন্দ্রে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী (মোটর সাইকেল) ৭৯ ভোট, শাহীনুল হক মার্শাল (আনারস) ৬৩ ভোট এবং জগদিশ বড়ুয়া (প্রজাপতি) ৩ ভোট পেয়েছেন। এ ভোট কেন্দ্রে নুরুল আবছার (তালগাছ) কোন ভোট পাননি। জেলার ৯টি উপজেলার প্রাপ্ত ফলাফলে সর্বোচ্চ ভোটে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন, শাহীনুল হক মার্শাল (আনারস)।
রামু উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সোমবার, ১৭ অক্টোবর সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২ পর্যন্ত রামু উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন ভোট কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। সকালে ভোটগ্রহণ চলাকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
এ কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১৪৫ জন। এরমধ্যে ১৪৫ জনই ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। নির্বাচন চলাকালে পুলিশ, র্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স, আনসারসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় ছিলো। এছাড়া ভোট কেন্দ্র, প্রতিটি বুথ সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিলো।