বার্তা পরিবেশক:
“শিশু-কিশোরদের সুকুমার বৃত্তির বিকাশে এগিয়ে যাই, মেধা ও মননে সাহিত্যের বিকল্প নাই” এই শ্লোগানকে ধারণ করে কক্সবাজার সাহিত্য একামেডীর উদ্যোগে ‘শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল সাহিত্য চর্চায় উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক সপ্তাহব্যাপী সাহিত্য প্রতিযোগিতা-২০১৬’ সমাপ্ত হয়েছে।
প্রতিযোগিতার সমাপনি দিবস আজ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় ইসলামীয়া মহিলা কামিল (মাস্টার্স) মাদরাসায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাদরাসায় কর্মসূচীর শুভ উদ্বোধন করেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মাওলানা জাফর উল্লাহ নূরী।
প্রতিযোগিতার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর শিশু ও মহিলা বিষয় সম্পাদক কবি শামীম আকতার। এছাড়াও বক্তব্য পেশ করেন মাদরাসার বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও সাহিত্য একাডেমীর জীবন সদস্য কবি-গীতিকার মো. ফরিদুল আলম।
একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাংবাদিক, লোকগবেষক মুহম্মদ নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাপনি ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তাগণ বলেন, যে জাতির সাহিত্য-সংস্কৃতি যত উন্নত সেই জাতি ততই উন্নত। আর সেকারণেই সাহিত্য-সংস্কৃতিকে কোনো জাতির উন্নতির মাপকাঠি বলা হয়।
বক্তাগণ বলেন, সাহিত্য-সংস্কৃতিকে বাদ দিয়ে কোনো জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখার পাশাপাশি সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার জন্য সুনির্দিষ্ট কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে। সেই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চাকে আবশ্যকীয় কমসূচী হিসেবে বাস্তবায়িত করতে হবে।
বক্তাগণ বলেন, শিশু-কিশোরদেরকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই। কক্সবাজার সাহিত্য একামেডী সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে শিশু-কিশোরদেরকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কর্মসূচীর আওতায় প্রতিষ্ঠানের ৫ থেকে ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘ক’ গ্রুপ, ৮ম থেকে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘খ’ গ্রুপ ও একাদশ থেকে স্নাতকোত্তর শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘গ’ গ্রুপের সর্বমোট ৭০ জন শিক্ষার্থী স্বরচিত ছড়া ও স্বরচিত কবিতা (লিখন প্রতিযোগিতা) ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে।
একাডেমীর শিশু ও মহিলা বিষয়ক সম্পাদক কবি শামীম আকতারের উপস্থাপনায় পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন একাডেমীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পিটিআইর প্রাক্তন সুপার রাজবিহারী চৌধুরী, একাডেমীর স্থায়ী পরিষদের সদস্য গবেষক নুরুল আজিজ চৌধুরী, ও প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক কবি দিলওয়ার চৌধুরী।
প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন একাডেমীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পিটিআইর প্রাক্তন সুপার রাজবিহারী চৌধুরী, একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক কবি মীর্জা মনোয়ার হাসান, একাডেমীর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ও স্থায়ী পরিষদ সদস্য কবি অধ্যাপক দিলওয়ার চৌধুরী প্রমুখ।
স্বরচিত কবিতা (লিখন) প্রতিযোগিতায় ‘ক’ গ্রুপে প্রথম স্থান দখল করেছে প্রতিষ্ঠানের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী নিশাত, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী উম্মি জান্নাত আমিনাতুল আওলা ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী বুশরা মোবারিকা। স্বরচিত কবিতার ‘খ’ গ্রুপে ১ম হয়েছে ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী মাইমুনা আকতার, ২য় হয়েছে ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী জেসমিন আকতার ও ৩য় হয়েছে ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী সুমিনা আকতার, ‘গ’ গ্রুপ প্রথম হয়েছে আলিম ১ম বর্ষের ছাত্রী শাহনাজ আরফিন তোহফা, ২য় হয়েছে আলিম ১ম বর্ষের ছাত্রী উম্মে জয়নব ও ৩য় হয়েছে একই শ্রেণীর আয়েশা ছিদ্দিকা। কবিতা আবৃত্তিতে ‘ক’ গ্রুপে ১ম হয়েছে ৬ষ্ট শ্রেণীর ছাত্রী উম্মে কুলসুম, ২য় হয়েছে ৬ষ্ট শ্রেণীর ছাত্রী জোসনা আকতার ও ৩য় হয়েছে ৬ষ্ট শ্রেণীর ছাত্রী মেহরিন ফৌজিয়া নিগার, ‘খ’ গ্রুপের কবিতা আবৃত্তিতে প্রথম হয়েছে ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী মিফতাহুল জান্নাত তিক্ব, ২য় হয়েছে ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী তাসনিম বিনতে শারেক ও ৩য় হয়েছে ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী তানিয়া পারভিন এবং ‘গ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে আলিম ১ম বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া কুলসুম, ২য় হয়েছে একই শ্রেণীর ছাত্রী মোবারকা আকতার, ৩য় হয়েছে একই ক্লাশের ছাত্রী আফিয়া জান্নাত। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও সদন বিতরণ করা হয়।
পুরস্কার ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক কবি মীর্জা মনোয়ার হাসান, স্থায়ী পরিষদ সদস্য ইসলামী গবেষক কবি আহামাদুল্লাহ, কবি অধ্যাপক দিলওয়ার চৌধুরী, একাডেমীর অর্থ সম্পাদক কবি মোহাম্মদ আমিরুদ্দীন ও একাডেমীর সহকারী সাধারণ সম্পাদক ছড়াকার জহির ইসলাম।