গিয়াস উদ্দিন ভুলু , টেকনাফ:
টেকনাফ সীমান্ত এলাকার পাশ^বর্তী দেশ মিয়ানমারে গত ৮ অক্টোবর গভীর রাতে সীমান্ত রক্ষি বিজিপি ও সন্ত্রাসীদের সাথে গোলাগুলি, বিজিপি ক্যাম্পে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন সুত্রে খবর নিয়ে আরো জানা যায়, গত ৯ অক্টোবর থেকে দু-পক্ষের গুলিবর্ষনে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষিবাহিনীর ৯ জন বিজিপি সদস্যসহ প্রায় ১৮ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
বিভিন্ন সুত্রে আরো জানা যায়, মিয়ানমার মংডু সীমান্তবর্তী এলাকায় গত শনিবার গভীর রাতে কাউয়ারবিল, নাকফুরা ও ট্যানাইসুটসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলা ও বিজিপি সদস্যদের সাথে গোলাগুলির সুত্রপাত শুরু হয়।
সেই সুত্রে ধরে টেকনাফ সীমান্তবর্তী এলাকার পার্শ্ববর্তী মংন্ডু শহরের চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে আতংক বন্ধ হয়ে দোকানপাটসহ বিভিন্ন প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্টান।
এদিকে উক্ত ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষিবাহিনী বিজিবি সদস্য ও কোষ্টগার্ড সদস্যরা রয়েছে সর্তক অবস্থানে। টেকনাফ নাফনদীর সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ানো হয়েছে বিজিবি সদস্যদের সংখ্যা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে টেকনাফ-মংন্ডু অভিবাসন ট্রানজিট যাতায়াত। বন্ধ রাখা হয়েছে নাফনদীতে নৌকা চলাচল। তার পাশাপাশি মিয়ানমারে আটকা পড়া ১৮ জন বাংলাদেশীকে ফেরত আনা হয়েছে। অপরদিকে মিয়ানমারের প্রায় ২শত নাগরিক এখনো স্ব-দেশে ফেরত যেতে পারেনি বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে তাদেরকে স্বদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য টেকনাফ-মংডু অভিবাসন-ট্রানজিট কর্মকর্তারা যোগাযোগের মাধ্যমে প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে।
টেকনাফ স্থলবন্দর সুত্রে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের সংঘঠিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে টেকনাফ স্থলবন্দরে এই পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে কোন ধরনের পন্যবাহী ট্রলার বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি।
এব্যাপারে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ আমাদের রামু কে বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে গত শনিবার গভীর রাতে বেশ কয়েকটি বিজিপি ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের হামলা ও গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। সেই খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমরা আমাদের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করেছি এবং কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন আমাদের এলাকায় সংঘঠিত না হয় সেই দিক বিবেচনা করে বাড়ানো হয়েছে বিজিবি সদস্যদের টইলদল। মিয়ানমারের কোন অপরাধী যেন আমাদের এলাকায় ঢুকতে না পারে সে দিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, যে কোন ধরনের অনাকাংখিত ঘটনা এড়াতে নাফ নদীতে জেলেদের মৎস্য শিকারের উপর মৌখিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। অপরদিকে মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা আমাদের কাছে সহযোগীতা চেয়েছেন তাদের দেশের কোন অপরাধী যেন বাংলাদেশে ঢুকে অবস্থান করতে না পারে।
টেকনাফ স্থল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা অভিবাসন-ট্রানজিট কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন আমাদের রামু কে জানান, ১০ অক্টোবর সোমবার মিয়ানমার হতে কোন অভিবাসন যাত্রী বাংলাদেশে আসেনি তবে গত কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া আটকা পড়া ১৮ জন বাংলাদেশী নাগরিকে ফেরত আনা হয়েছে। তার পাশাপাশি গত কয়েক দিন আগে মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় ২শত জন নাগরিক আমাদের দেশে রয়ে গেছে। তবে তাদেরকে যোগাযোগের মাধ্যমে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
টেকনাফ স্থল বন্দর কাস্টমস কর্মকর্তা আব্দুল মন্নান আমাদের রামু কে জানান, ঘটনার পর থেকে এই পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে কোন পন্যবাহী ট্রলার স্থল বন্দরে প্রবেশ করেনি।