রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের সংরক্ষিত বনে একটি বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে। হাতিটি অসুস্থ হয়ে মারা গেছে বলে ধারণা করছেন বন বিভাগের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) বিকালে বন্য হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন, কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সারোয়ার আলম। তিনি জানান, আগের দিন বুধবার বিকেল থেকে হাতিটি অসুস্থ হয়ে, রামু উপেজলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের দরিয়ারদীঘি কেচুবনিয়া পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান করছিল। হাতিটির চিকিৎসায় কক্সবাজার বন বিভাগের উদ্যোগে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিলো।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সারোয়ার আলম আরও জানান- একটি বন্যহাতি লোকালয়ে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমাদের বনববিভাগের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অনেক চেষ্টা করেও হাতিটিকে তোলা সম্ভব হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার চকরিয়া বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের পশু চিকিৎসক এসে নিশ্চিত করে যে হাতিটি মারা গেছে।
রামু উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: অসীম দাশের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,আমরা অসুস্থ হাতির পাশে যাওয়ার এক দুই মিনিট মতো হাতিট জীবিত ছিল। পরে চোখ বন্ধ করে পেলে। আমরা হাতির শরীরের উপরে কোন ক্ষতের চিহু দেখিনি। ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে কর্মরত ডাক্তারগন এই হাতিটিকে ময়নাতদন্ত করেছেন। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে ভিতরে কোন আঘাতের চিহ্ন আছে কিনা জানা যাবে। মৃত হাতিটিকে ওই এলাকায় গর্ত করে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে কাজ পরিচালনা করা একজন হাতি বিশেষজ্ঞ বলেন, হাতি অনেক বিশাল আকারের প্রাণী হওয়ায় প্রতিদিন যে পরিমাণ খাবার গ্রহণ করে তা যোগানের জন্য অনেক বড় বন থাকা দরকার। একটি হাতি থাকা মানে হচ্ছে, অনেক বড় একটা বনাঞ্চল সংরক্ষিত থাকা। তবে দীর্ঘদিন ধরে আবাসস্থল ধ্বংস, চলাচলের রাস্তায় বিভিন্ন স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ এবং রোহিঙ্গাদের বসবাস সহ একাধিক কারণে কক্সবাজার উত্তর এবং দক্ষিণ বন বিভাগের বনাঞ্চলে বিচরনরত ১০০ এরও বেশি হাতি হুমকির সম্মুখীনে রয়েছে। ইতিমধ্যে গত কয়েক বছরে অনেক হাতি চোরাকারবারিদের গুলির আঘাতে, বিষ প্রয়োগে এবং বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়।
হাতি সংরক্ষণ বনবিভাগ একার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়. হাতির আবাসস্থল সংরক্ষণ, হাতি মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসন, এবং মানুষের আক্রমণ থেকে হাতিকে রক্ষা করার জন্য বন বিভাগের পাশাপাশি স্থানীয় জেলা প্রশাসন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ সাধারণ জনগণ কে সাথে নিয়ে সমন্বিত কার্যক্রম হাতে নিতে হবে।