দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া:
মানুষকে মহান আল্লাহ্পাক উত্তমরুপে সৃষ্টির সেরাজীবের সকল উপাদানে পরিপূর্ণ করে তৈরী করেছেন। সৃজনশীলতা,দক্ষতা ও জ্ঞানের মাধ্যমে সৃষ্টির সকল কিছুর উপর আধিপত্য বিস্তারের ক্ষমতা সহ আল্লাহ্পাকের মাখলুকাত নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করার ক্ষমতায় মানুষকে পূর্ণতা দান করা হয়েছে।
মানুষের ব্রেইনের গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্যের মাঝে কিছু তথ্য হল, একজন মানুষের মস্তিস্ক অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর চেয়ে প্রায় ৩ গুণ বড়, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ৭০,০০০ বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে সক্ষম।
মানুষের মস্তিস্কের প্রতি সেকেন্ডে ১০১৫টি হিসাব করার ক্ষমতা আছে, যা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সুপার কম্পিউটারের ও নেই।
ডক্টর ওয়াল্টারের মতে যদি মানুষের মস্তিষ্কের সমমানের একটি বৈদ্যুতিক ব্রেইন তৈরি করা যায় তাহলে তার খরচের টাকা শুনলে ১৫০০,০০০০০০০,০০০০০০০ টাকা পড়বে। সেই পরিমাণ টাকা দিয়ে বর্তমান সময়ে প্রায় অত্যাধুনিক ১০ কোটি কম্পিউটার কেনা সম্ভব। আর এই যান্ত্রিক মস্তিকের আয়তন হবে ১৮ টি একশ তলা বিল্ডিংয়ের সমান। আর এটা চালাতে ১হাজার কোটি কিলোওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে।
মানুষের মস্তিষ্ক সেকেন্ডে ১০-১৫টি শব্দ ধারণ করতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলেন- মানুষের মস্তিস্কে ২২ লক্ষ সেল আছে, সাধারণত মানুষ তার থেকে মাত্র ৩% সেল ব্যবহার করে, আর বাকী গুলো বেকার হয়ে পরে থাকে। তাছাড়া বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবি শ্রেণীর মানুষ ব্যবহার করে ১০ থেকে ১১% সেল। উপরোক্ত তথ্য সূত্র: লাকসাম বার্তা ৫/১০/১৬ইং।
সেই সৃষ্টির সেরা মানুষ নিজের মত করে কম্পিউটার নামক ব্রেইন তৈরী করেছেন। সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া শিশুর ব্রেইন যেমন থাকে ঠিক তেমন।
একটি শিশু বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হওয়ার সাথে সাথে যে শব্দ গুলো শোনে সেই শব্দ গুলো তার স্মৃতিতে গেঁথে যায়-স্মরণ থাকে। একই ভাবে কম্পিউটার ব্রেইনে যে ধরনের সফটওয়্যার ইন-করানো হবে ঠিক সেই ধরণের সফটওয়্যারের কাজ সেই কম্পিউটার করতে পারবে।
যে কাজ কম্পিউটার দিয়ে করানো হবে, সেই কাজের উপযোগী সফটওয়্যার কম্পিউটারে ইনষ্টল না থাকলে কম্পিউটার সেই কাজে সম্পূর্ণভাবে অক্ষমতা প্রদর্শন করবে। একই ভাবে আমাদের সন্তান তাদের চারপাশে যা কিছু দেখে, তা দেখে সে শিখছে ও আয়ত্ব করছে। সেই পরিবেশে আমরা কতটা নীতি নৈতিকতা ও সৎগুণাবলীর সমন্বয় ঘটাতে পেরেছি তা অবশ্যই ভেবে দেখা প্রয়োজন।
“একটি শিশু নিষ্পাপ থাকে, শিশুটি বৃদ্ধির সাথে সাথে যা দেখে, দেখানো হয়, করানো হয়, তাই সে দেখে করে ও শিখে। তাই পরিবারের ভালোবাসা, ধর্মীয় মূল্যবোধের পাশাপাশি, নেশামুক্ত সৎ চরিত্রবান সন্তান গঠনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার দিকে নজর দেয়া সকল অভিভাবকের একান্তই প্রয়োজন।”
বর্তমান সময়ে আমরা দেখেছি নেশায় আসক্ত মেয়ে ঐশী নিজ মাতা-পিতাকে হত্যা করেছে। দামী বাইকের টাকা না পেয়ে সন্তান নিজ মাতা-পিতার গায়ে আগুন দিয়েছে।
এই সবকিছু মানবিক মুল্যবোধের পরিপন্থী। প্রত্যেকে প্রত্যেকের অবস্থান থেকে সৃষ্টিকর্তার প্রতিটি হুকুম সঠিক ভাবে পালনের মাধ্যমে নিজ নিজ শুদ্ধতা অজর্ন করে, সমাজ থেকে সমস্ত অপকৌশল, অপশক্তি, অশালিনতা, কুসংস্কার, হঠকারিতা, হিংসা-বিদ্ধেষ, হানাহানি, রাহাজানি, ঝগড়া, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, মিথ্যাচার সহ সকল অশোভন, অমার্জিত অাচরণ পরিত্যাগের মাধ্যমে, সুন্দর একটি পরিবেশ আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের পর প্রজন্ম পর্যন্ত উপহার দিতে সামর্থ হতে পারলেই,সমাজ ও দেশ থেকে অরাজকতা, অমানবিক, নির্দয় আচরণের সমাপ্তি ঘটতে পারে।