একের পর এক স্লেজিং এবং মুখের সামনে এসে উদযাপন করছিলেন ভারতীয় ফিল্ডাররা। অথচ কিছুক্ষণ আগেও তাদের চেহারার দিকে তাকানোর মতো পরিস্থিতি ছিল না। মাত্র ১২ ওভারেই যে ৭০ রান তুলে ফেলেছিল বাংলাদেশ। তখন মনে হয়েছিল সহজেই তারা ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে পা রাখবে। কিন্তু সেই ধারণা বদলাতে খুব বেশি সময় লাগেনি। একের পর এক উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। শেষপর্যন্ত ভারতের চেয়ে ৫১ রানের দূরত্বে থেমে যায় সাইফ হাসানের দল।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলছিলেন বাংলাদেশ-ভারতের ক্রিকেটাররা। ফাইনালে উঠতে উভয়পক্ষই ছিল মরিয়া। শুরুর ধাপে বাংলাদেশ এগিয়েও ছিল। ১৩৭ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। কিন্তু শেষদিকে ভারতীয় অধিনায়ক ইয়াশ ধুলের অর্ধশতক সেই ধাক্কা তো সামাল দিয়েছে-ই, একইসঙ্গে যেন বাংলাদেশকেও তখনই হারিয়ে দিয়েছেন তিনি!
ভারতের দেওয়া ২১২ রান তাড়ায় শুরুতেই টাইগার ওপেনার নাঈম শেখ ও তানজিদ হাসান ছিলেন উড়ন্ত। কিছুদিন আগেই জাতীয় দলের ব্যাটিংয়ে ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়া নাঈম ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। তবে তার সেই তাড়না বেশিক্ষণ ছিল না। থিতু হয়েও তিনি ৩৮ রান করেই মানাভ সুথারের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান। তবে তার বিদায়ের পর ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান।
এরপর অবশ্য ৫১ রানেই তিনি ক্যাচ আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। তাকে ফিরিয়েছেন নিশান্ত সিন্ধু। এরপর অল্প রানের ব্যবধানেই ফিরেছেন জাকির হাসান (৫), সাইফ হাসান (২২), সৌম্য সরকার (৫) এবং আকবর আলী (২)। জাতীয় দলের হয়ে অনেকদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা মোটেও কাজে লাগাতে পারেননি সৌম্য। অথচ তিনি জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্ডিকার হাথুরুসিংহের পছন্দের ছাত্র ছিলেন। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের আগে সৌম্যকে দলে ফেরাতে বেশ তোড়জোড় চালিয়েছিলেন হাথুরু। কিন্তু মাঝেমধ্যে ব্যাট কিংবা বলে সম্ভাবনাময় ইঙ্গিত দিলেও সেটিতে ঠিক ধারাবাহিক ছিলেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটার।
এছাড়া ধারাবাহিক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন আকবর ও সাইফ হাসানরা। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের আগে অন্তত ব্যাট হাতে তাদের পারফরম্যান্স প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। ৭০ রানে প্রথম উইকেট হারানো বাংলাদেশ পরবর্তী ৯০ রানে বাকি ৯ উইকেট হারিয়েছে। শেষদিকে মাহমুদুল হাসান জয় ২০ এবং শেখ মেহেদী ১২ রান করেন। দুজন ক্রিজে থাকাবস্থায় ২০ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ছিল মাত্র ৬৬ রান। কিন্তু ভারতীয় স্পিনারদের সামনে তারা বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ফলে ১৬০ রানেই অলআউট হয় বাংলাদেশ।
ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট নিয়েছেন নিশান্ত সিন্ধু। এছাড়া মানাভ সুথার ৩ উইকেট নেন।
এর আগে তানজিম হাসান সাকিব, শেখ মেহেদী ও রাকিবুলদের দারুণ বোলিংয়ে ক্রিজে দাঁড়াতে হিমশিম খেয়েছেন প্রতিপক্ষ ব্যাটাররা। ১৩৭ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ভারত রীতিমতো ধুঁকছিল। তবে সেখান থেকে পাল্টা লড়াই শুরু করেন দলটির অধিনায়ক ইয়াশ ধুল। তার ৬৬ রান ভারতীয় বোলারদের লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেয়।
সূত্র : ঢাকা পোস্ট