রামু উপজেলায় মদিনা ডেন্টাল ক্লিনিক নামে দাঁতের এক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রেজিস্টার্ড কোন সনদ না থাকা সত্ত্বেও দাঁতের চিকিৎসা করার সময়ে আবদুল কাদের ও রাসেল নামে কথিত দুই দন্ত চিকিৎসককে আটক করে ১ মাস করে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। মূল্য তালিকা না থাকায় হেলথ মেডিকেল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার নামে আরও একটি ক্লিনিককে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে রামু উপজেলা চৌমুহনী স্টেশন ও রামু বাইপাস ফুটবল চত্ত্বর এলাকায় সাতটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অভিযান পরিচালনা করেন, ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মুস্তফা।
ভ্রাম্যমান আদালতের এ অভিযানে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া, উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মমতাজ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় সহায়তা করেন।
ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে, রামু উপজেলার চৌমুহনী স্টেশন ও রামু বাইপাস ফুটবল চত্ত্বরের সাতটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমান আদালত। এ সময় রামু বাইপাস ফুটবল চত্ত্বর এলাকায় মদিনা ডেন্টাল কেয়ার নামে দাঁতের এক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে রেজিস্টার্ড সনদ বিহীন দুই চিকিৎসককে এক রোগির চিকিৎসা করার সময়ে হাতেনাতে আটক করেন, ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা মুস্তফা। আবদুল কাদের ও রাসেল নামে কথিত ওই দুই দন্ত চিকিৎসককে এক মাস করে কারাদন্ড দেন ভ্রাম্যমান আদালত। অভিযোগ রয়েছে, মদিনা ডেন্টাল কেয়ার নামে দাঁতের ওই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানটি ইতিপূর্বে চৌমুহনী স্টেশনে ছিলো। চৌমুহনী স্টেশনে থাকা কালেও ভ্রাম্যমান আদালত মদিনা ডেন্টাল কেয়ারকে জরিমানা করেছিলেন। এ ছাড়া মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় চৌমুহনী স্টেশনের হেলথ মেডিকেল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও চৌমুহনী স্টেশনস্থ আরও একাধিক ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার এবং দন্ত চিকিৎসালয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে নির্দেশ দেয়া হয় এবং কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে সেবার মান বাড়াতে তাগিদ দেয়া হয়।
জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মুস্তফা জানান, নিবন্ধন না থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়মে পরিচালিত হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে। বর্তমানে ডেঙ্গু ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই ডেঙ্গু চিকিৎসা ও পরীক্ষা করতে এসে যদি কেউ হয়রানি হয়, তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমনকি ডেঙ্গু পরীক্ষায় সরকারি নির্ধারিত ফি থেকে, অতিরিক্ত আদায় করলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি জনসাধারণকে সরকারি এবং সরকার অনুমোদিত স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা সেবা ও প্যাথলজিতে পরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে অনুরোধ জানান।
রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া জানান, বেসরকারি প্যাথলজি সেন্টারগুলোতে সিবিসি’র জন্য ৪০০ টাকা, ডেঙ্গু এনএসএন ওয়ান ৩০০ টাকা, এজিজি এবং আইজিএম এ দুটো পরীক্ষার জন্য ৩০০ টাকা করে নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব পরীক্ষা সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা এবং অন্যান্য চিকিৎসাসেবা সঠিকভাবে চলছে কিনা তা জানার জন্য, রামু উপজেলার সাতটি প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করা হয়ে। তিনি বলেন, রামুতে স্বাস্থ্য সেবার মান ফিরিয়ে আনতে অভিযান পরিচালনা দরকার ছিল। এ ধরনের অভিযান অব্যাহতভাবে পরিচালিত হলে যেমন খুশি তেমনভাবে হাসপাতাল পরিচালনা বন্ধ হয়ে যাবে। বেসরকারি পর্যায়ে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।