গিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ:
টেকনাফে কিছুতেই থামছে না বাল্য বিবাহ। এই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত সংগঠিত হচ্ছে বাল্য বিবাহ। এবার বাল্য বিবাহের শিকার হল ১৪ বছরের এক জে,এস,সি পরীক্ষার্থী।
সে সেন্টমার্টিনের কুনাপাড়ার বাসিন্দা মৃত মোঃ আবদুল্লাহ ও আমিনা খাতুনের মেয়ে আনোয়ারা আক্তার (১৪) সেন্টমাটিন বিএন ইসলামিক হাইস্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী এবং জে,এস, সি পরিক্ষার্থী।
খবর নিয়ে জানা যায়, গত ২০-২৫ দিন আগে পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা মুখতার আহমদের পুত্র জয়নাল আবেদীনের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। সে পার্শ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মরত একজন দপ্তরী। এদিকে জে,এস,সি পরিক্ষার্থী আনোয়ারা আক্তার বেশ কয়েক দিন স্কুলে অনুস্থিত থাকায়, স্কুল শিক্ষকরা খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে।
এই খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে অত্র স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মাঝে নেমে আসে হতাশা। কারণ মেয়েটি লেখাপড়ায় খুবই মেধাবী ছিল।
কাল (১লা নভেম্বর) জে,এস,সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করার কথা রয়েছে। কিন্তু মেয়েটি দপ্তরীর পাল্লায় পড়ে পরীক্ষা ও নিজের জীবনের কথা চিন্তা না করে বাল্য বিবাহে আবদ্ধ হয়।
ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে অত্র স্কুলে প্রধান শিক্ষক উজ্জল ভৌমিক আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, এভাবে কম বয়সি ছাত্র-ছাত্রীরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে বাল্য বিবাহের মত কর্মকান্ড করতে থাকলে এই এলাকা শিক্ষায় আরো পিছিয়ে পড়বে। তাই এই সমস্ত বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে হলে, সর্ব প্রথম অভিভাবকদেরকে আরো সচেতন হতে হবে। ছেলে-মেয়েরা কোথায় যাচ্ছে, কি করছে, ঠিকমত লেখাপড়া করতেছে কিনা, সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে প্রতিনিয়ত।
তিনি আরো জানান, এব্যাপারে টেকনাফ উপজেলার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদেরকে জানানো হয়েছে। তারপরও আমরা মেয়ের অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ করে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এব্যাপারে স্কুলের গভর্ণিং বডির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুর আহমদ দু:খ প্রকাশ করে বলেন বিষয়টি শুনেছি। মেয়ের অভিভাবককে ডেকে পরীক্ষায় যেন অংশ গ্রহন করে সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, সেন্টমার্টিনদ্বীপ বিএন ইসলামিক হাইস্কুল এন্ড কলেজের এবারের জেএসসি পরিক্ষার্থী সংখ্যা ৫৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ৩৪ জন এবং বাল্য বিবাহে আবদ্ধ হওয়া আনোয়ারা আক্তারসহ ছাত্রীর সংখ্যা ২৪ জন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মেয়েটি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সেন্টমাটিন থেকে এখনো টেকনাফে আসেনি।