নিজস্ব প্রতিবেদক, উখিয়া।
সরকার প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া প্রবণতা রোধে উপবৃত্তি প্রথা চালু করায় প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে আমুল পরিবর্তন এসেছে।
তবে গত ৮ মাস ধরে উখিয়া ৭৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৬টি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা প্রায় ১৫ হাজার ছাত্র/ছাত্রী উপবৃত্তির টাকা না পাওয়ার কারণে শিক্ষাঙ্গণে বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষানুরাগী সচেতন মহল।
রাজাপালং ইউনিয়নের হাতিমোরা গ্রামের রিক্সা চালক আবুল কালাম জানায়, উপবৃত্তির টাকা দিয়ে খাতা কলম কিনে দেওয়া হত। এছাড়া সংসারের টুকিটাকি খরচ বহন করা যেত।
দীর্ঘদিন ধরে টাকা না পাওয়ার কারণে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। সে জানায়, শিক্ষকরাও বলতে পারছেননা কখন টাকা দেওয়া হবে। হাতিমোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার ইসলাম জানান, অধিকাংশ হতদরিদ্র জনগোষ্ঠির ছেলে মেয়ে এ স্কুলে পড়া লেখা করছে। তৎমধ্যে অতি দরিদ্র ১৮৬ জন ছাত্র/ছাত্রী উপবৃত্তি পাচ্ছে। গত অর্থ বছরের জুলাই থেকে উপবৃত্তি বন্ধ থাকার কারণে সুবিধাভোগী ছাত্র/ছাত্রীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। এমনকি অনেকই স্কুলে আসতে অনীহা প্রকাশ করছে।
উপকূলীয় এলাকায় প্রতিষ্ঠিত মোঃ শফির বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আকতার হোসেন জানান, উপবৃত্তি বন্ধ থাকায় ছাত্র/ছাত্রীর উপস্থিতি আনুপাতিক হারে কমেছে। তিনি বলেন, এখানে যে সমস্ত শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পাচ্ছে তাদের অনেকেই পিতার সহযোগি হয়ে বিভিন্ন শ্রমের সাথে জড়িত। তাদের উপবৃত্তির টাকা দিয়ে স্কুলে উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির নিশ্চিত করা, শ্রেণি কক্ষে উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য সরকার ২০০০ সালে উপবৃত্তি প্রথা চালু করে। এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলেও গত অর্থ বছরের জুলাই মাস থেকে উপবৃত্তি বন্ধ থাকায় প্রাথমিক স্তরের উপবৃত্তি সুবিধাভোগী ও অভিভাবক হতাশ হয়ে পড়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামীম ভূঁইয়া জানান, ২য় পর্যায়ের উপবৃত্তি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছরের জুন মাসে। ৩য় পর্যায়ের প্রকল্প শুরু করতে বিলম্ব হওয়ায় ছাত্র/ছাত্রীরা ২ কিস্তির টাকা পায়নি।
জেলা মনিটরিং অফিসার জাহেদুল ইসলাম জানান, ৩য় পর্যায়ের প্রকল্পের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
চলতি মাসেই উপবৃত্তির টাকা ছাত্র/ছাত্রীরা পেতে পারে।