শহিদুল ইসলাম, উখিয়া।
কক্সবাজার বিমান বন্দর থেকে পোনাভর্তি করে বেসরকারি বিমানটি উড্ডয়নের ৮ কিলোমিটার অতিক্রম করার পর বিমানের একটি ইঞ্জিন বিকল হলে বৈমানিক বিমানটিকে পুণরায় কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরনের জন্য ফিরিয়ে আনার পথে বিমান বন্দর থেকে ১ কিলোমিটার পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে সমুদ্রে অবতরনের চেষ্টা করেন। এতে বিমানের লেন্ডিন গিয়ারের চাকা না নামায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
এ ব্যাপারে কক্সবাজারের বেসরকারি বিমান সংস্থার রিজেন্ট এর সাবেক ম্যানেজার কাজী ফখরুদ্দিন হিরো বর্তমানে ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম তাদের মতে, একটি ইঞ্জিন বিকল হওয়ার কারণে পাশাপাশি লেন্ডিং গিয়ার ষ্টক হওয়ার কারণে বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
এই দুর্ঘটনায় বিমানের পাইলট নিহত হয়েছেন। আহত অবস্থায় কো-পাইলটকে উদ্ধার করলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরো ২ জন।
নিহত পাইলটের নাম ক্যাপ্টেন গোফরে প্রকাশ মুরাদ (৪৮)। আহত অপর কো-পাইলটের নাম পেট্টো ভিবেন প্রকাশ কূলথানব(৪৫)।
নিখোঁজরা হলেন, ফাস্ট অফিসার ইভান ও ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার আদ্রিদি। তারা চারজনেই রাশিয়ার নাগরিক।
এ ঘটনায় কমপক্ষে কোটি টাকার চিংড়ি পোনা সাগরের পানিতে ভেসে গেছে।
এদিকে নাজিরাটেক সমদ্র পয়েন্টে বিধস্ত কার্গো বিমানটি উদ্ধারে যৌথ অভিযান চলছে। ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও নৌবাহিনীর দু’টি জাহাজ ওই উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। এছাড়া স্থানীয়রাও বিধস্ত বিমানটি উদ্ধার অভিযানে নেমেছে।
বুধবার ৯ মার্চ সকাল পৌনে ১০টার দিকে নাজিরাটেক সমুদ্র পয়েন্টে ট্রু-এভিয়েশনের একটি কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত পাইলটকে উদ্ধারকারী সোনা মিয়া মাঝি আমাদের রামুকে জানান, সকাল পৌনে ১০টায় মোস্তাক পাড়ার চর এলাকায় অবস্থান করছিলেন তারা। এসময় হঠাৎ দেখেন উড্ডয়নরত কার্গো বিমানটি বিকট শব্দ করে আধা কিলোমিটার দূরে সমুদ্রে পতিত হয়।
তারা ১০-১২ জন উদ্ধারের জন্য দ্রুত বোট চালিয়ে ঘটনাস্থলে যান। ২০ মিনিটে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পাইলট মুরাদকে। এসময় অন্য আরেকটি বোট উদ্ধার করে কো-পাইলট কূলথানবকে।
জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক নোবেল কুমার বড়ুয়াে আমাদের রামুকে জানান, পাইলটের মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে। অন্যজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কক্সবাজার বিমান বন্দরের ম্যানেজার সাধন কুমার মোহন্ত বলেন, কার্গো বিমানটি চিংড়ি পোনা নিয়ে যশোর যাচ্ছিল। যান্ত্রিক ক্রটির কারণে হয়তো বিমানটি বিধস্ত হয়েছে। তবে এখনও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছেনা কিভাবে এই কার্গো বিমানটি বিধস্ত হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ আবদুল মজিত জানান, নিখোঁজদের ও বিধস্ত প্লেনটিকে উদ্ধারে যৌথ অভিযান চলছে। তীরে আনার চেষ্টা চলছে।
ফায়ার সার্ভিস, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় চলছে ওই অভিযান।
তবে কোস্টগার্ড কন্টিনজেন্ট কমান্ডার জানান, নৌবাহিনীর উদ্ধার জাহাজ দু’টি পানি কম থাকায় আসতে পারছে না। তারা গভীর পানিতে অবস্থান নিয়েছেন।
বলাকা হ্যাচারির মালিক ও কক্সবাজার শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি দাবি করেন, কার্গো বিমানটি বিধস্ত হওয়ার কারণে তার সহ পোনা ব্যবসায়ীদের ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আলী হোসেন জানান, কার্গো বিমানটিতে পাইলট, কো-পাইলট এবং দু’জন ইঞ্জিনিয়ার ছিলো। এর মধ্যে একজন নিহত ও কো-পাইলটকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। অপর দু’জনকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১ জনকে মৃত, ১ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার ও ২ জন নিখোঁজ রয়েছে। বিমান, কোষ্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা নিখোঁজদের উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।