আব্দুল হামিদ:
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার আবদু জাব্বারের বিরুদ্ধে নানা অপর্কমের গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউনিয়নের খোদ চেয়ারম্যান,মেম্বার ও এলাকাবাসী এ অভিযোগ তোলেন তার বিরুদ্ধে।
আর এ বিষয়ে তারা নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই অভিযোগও দেন জরুরী ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওর্য়াড মেম্বার দিল মোহাম্মদ ও ছৈয়দ আলম জানান,চৌকিদার আবদু জাব্বার একজন ঠক, প্রতারক, চাদাবাঁজ ও মামলাবাজ। তার চাকুরী জীবনে সে এমন কোন কাজ নেই করেনি। এলাকার সাধারণ মানুষ তার এ সব অপকর্মে অতিষ্ঠ।
তারা আরো জানান, এ চৌকিদারের জন্মস্থান ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে। ভোটার হন ইউনিয়নের ২ নম্বর ওর্য়াডে। চৌকিদারীর দায়িত্ব নেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডে। রাতে অবস্থান করেন ২ ওর্য়াডে। কিন্ত অপকর্ম করেন সারা ইউনিয়নেই। একাধিক এলাকাবাসী এ প্রতিবেদককে জানান, আবদু জাব্বারের অত্যাচারে ইউনিয়নের অনেক নিরীহ লোকজন এলাকা ছাড়া হয়ে গেছে। সীমান্তে নিয়োজিত আইন-শৃংখলা বাহিনী,সীমান্ত রক্ষী বাহিনী সহ অনেকের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে তার ব্যক্তিগত শত্রুদের ইয়াবা ব্যবসায়ী বা অন্য যে কোন ভয়ানক অপরাধের সাথে জড়িত আছে বলে আসামী করে দেয় এ জব্বার।
বিষয়টি স্বীকার করে ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুল গফুর জানান,গত ৩ জুন দিনের ২ টার দিকে শিশু সহ মিয়ানমারের ৩ নাগরিককে আটক করে তুলে দেন তিনি। এ সময় চৌকিদার আবদুজাব্বার ও ছিলেন। পরে এদের তল্লাসী চালিয়ে ১৪২১টি (চৌদ্দশত একুশ টি) ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয় তাদের কাছ থেকে। বিজিবি এ তিনজনের মধ্যে দু’জনকে পুশব্যাক করে দেন মিয়ারনমারে। আর একজনকে তাদের হেফাজতে রাখেন।
এলাকাবাসী ও ইউপি মেম্বাররা আরো জানান, এমন স্বচ্ছ ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিয়ে বিএনপির এ নেতা আবদু জব্বার তার ব্যক্তিগত প্রতিপক্ষ আওয়ামী পরিবারের এলাকার নিরীহ লোক যথাক্রমে ছৈয়দ নূর, মনির আহমদ,কামাল হোসেন ও মোহাম্মদুল হককে এ ঘটনায় জড়িত আছে বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সেই মিয়ানমার নাগররিকের সাথে এ ৪ জনকে আসামী করায় এ মামলায়। যাতে করে এলাকাতে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গির আজিজ জানান, চৌকিদার আবদু জাব্বার মূলত একজন ঠক ও প্রতারক। কার কাজের বলয় ইউনিয়ন পরিষদ হলেও সে এখানে কোন দায়িত্ব পালন করে না। মেম্বারকে মানে না। সীমান্তের রোহিঙ্গা পারাপারে দালালী করে বেড়ায় সারা দিন। আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বা বিজিবি’র সোর্স পরিচয়ে অপকর্ম করে লোকজনকে হয়রানী করে আসছে দিনের পর দিন। যাতে সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নিবাৃহী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল এ বিষয়ে জানান, ঘুমধুমের চেয়ারম্যান এবং কয়েকজন মেম্বার চৌকিদার আবদু জাব্বারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে ঠিকই। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে তার বিরুদ্ধে।
তবে অভিযুক্ত চৌকিদার আবদু জাব্বার তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি প্রতিবাদ করেন বলেই মেম্বার- চেয়ারম্যানরা তার বিরুদ্ধে এমন আচরণ করছেন। কয়েকটি মিথ্যা রেজুলেশন করেছেন তার চাকুরী খাওয়ার জন্যে। তিনি দাবী করেন, আসলে তিনি একজন সৎ মানুষ। মানুষের সেবা করেন,হয়রানী করে না। মিথ্যা মামলা দেন না।