শহিদুল ইসলাম, উখিয়া।
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং শরনার্থী শিবিরের নতুন টালের বস্তিতে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একের পর এক নিরীহ রোহিঙ্গারা হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে নতুন টালের এ বস্তিতে ২ যুবক প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। এতে করে সাধারণ শরনার্থীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজের পাশাপাশি তারা চরম আতংকগ্রস্থ হয়ে উঠেছে। ফলে পুরো রোহিঙ্গা শিবিরের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অবনতিসহ পুলিশ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
এ কারণে শিবিরের অভ্যন্তরে বিভিন্ন শক্তিশালী উগ্রবাদী রোহিঙ্গা অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ফলে পুরো রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির এখন খুনের অঞ্চল হিসাবে বিস্তৃতি লাভ করছে। প্রায় আড়াই লক্ষাধিক রোহিঙ্গার জনজীবন হুমকির মুখে বলে ক্যাম্প সংশ্লিষ্ট একটি বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে।
গত রোববার রাতে একটি শালিসী বৈঠকের ঘটনা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ মারামারিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। সন্ত্রাসীদের দা’য়ের কোপে নতুন টালের ই-২ ব্লকের বাসিন্দা মৃত অলি আহমদের ছেলে আবুল বাছেদ (৪০) বলে জানা গেছে।
গত রাত ৯টার দিকে ঘটনার সুত্রপাত হলেও পুলিশ দেরিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য আবুল বাছেদের মৃত্যু হয় বলে প্রত্যেক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
এদিকে নিহত আবুল বাছেদের লাশ সোমবার সকালে ঘটনাস্থল উদ্ধার করে ক্যাম্প পুলিশ ও থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। হত্যাকান্ডে জড়িত ঘাতকদের এখনো কাউকে রহস্যজনক কারণে পুলিশ আটক করছেনা। এ ছাড়া গত ২ সপ্তাহ আগে একই ঘটনা নিয়ে মান্নান নামের এক ব্যক্তি মারধরের শিকার হয়ে পরদিন সে হাসপাতালে মারা যায়। এসব ঘটনার সুষ্ট তদন্ত বা নিরপেক্ষ বিচার না হওয়ায় দিনদিন কুতুপালং শরনার্থী শিবিরের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ভেঙ্গে পড়েছে। এবং অপরাধীরা একের পর এক হত্যাকান্ডে মেতে উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নতুন টালের রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণ নিতে দু’টি পক্ষ গত রবিবার রাতে সমঝোতার বৈঠকে বসেন। এতে এক পক্ষে নেতৃত্ব দেন সন্ত্রাসী রাকিব উল্লাহ অপর পক্ষে স্বঘোষিত চেয়ারম্যান আবু ছিদ্দিক। এসময় দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হামলা ও মারধর বেঁধে গেলে সন্ত্রাসীদের দা’য়ের কোপে ঘটনাস্থলে আবুল বাছেদ নিহত হয়।
উখিয়া থানার উপ-পরিদর্শক ইরফান আমাদের রামু কে বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাবিবুর রহমানও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।