টেকনাফ প্রতিনিধি:
নানান আলোচনা-সমালোচনা, উদ্বেগ-উৎকন্ঠা এবং নিহত-আহতের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো টেকনাফ উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর বিজয়ী প্রার্থীদের মধ্যে আনন্দ-উল্লাস করলেও পরাজিত প্রার্থীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে নানান রকম ক্ষোভ।
এলাকায় ভোট দেয়া না দেয়া নিয়ে হুমকি-ধমকি ও ছোট-খাট সংঘর্ষ। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে নানা রকম আতংক। এবার টেকনাফের ৬ ইউপি নির্বাচনে ৫৪টি ওয়ার্ডে যারা নতুন চেয়ারম্যান-মেম্বার হয়েছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগ তরুন উদীয়মান যুবক।
এনিয়েও চলছে নানা রকম আলোচনা-সমালোচনা। এলাকার বয়োজ্যেষ্ট ও সচেতন মহল মত প্রকাশ করে বলেন, এবারের নির্বাচনে যে সমস্ত তরুন-যুবকরা নির্বাচিত হয়ে এসেছেন তাদের মধ্যে অনেকেই কেমন জনপ্রতিনিধিত্ব করবেন এবং এলাকার উন্নয়ন করবেন সে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কেননা এবারের নির্বাচনে প্রার্থীরা যেভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা বিলি করেছেন তা আগে কখনও আমরা দেখেনি। এখন আমাদের দাবি হচ্ছে, যেসব তরুন-যুবকরা মেম্বার নির্বাচিত হয়েছেন তাদেরকে এলাকার উন্নয়নের কাজ করতে স্থানীয় সাংসদসহ উপজেলা প্রশাসনের সর্বস্থরের কর্মকর্তাদের সহায়তা করতে হবে। সেই পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এলাকার উন্নয়ন কোনদিন সম্ভব হবে না।
এদিকে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে ঘটে গেছে ছোট-বড় অনেক দূর্ঘটনা। যেমন, কেন্দ্র দখলের চেষ্টা, জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা, এলাকায় প্রভাব খাটানো এসমস্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে হয়েছে গাড়ী ভাংচুর, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে গুলি বিনিময় ইত্যাদি।
এদিকে আওয়ামীলীগ-বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের জয়ী করতে চেষ্টার ঘাটতি ছিলনা জেলা-উপজেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করায় তাদেরকে করা হয়েছে দল থেকে বহিস্কার। আবার অনেক এলাকায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নামধারী ও পদবীধারী নেতারা কাজ করেছেন স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে। এনিয়ে এখনো চলছে আলোচনা-সমালোচনা ও বহিস্কারের হুমকি।
উল্লেখ্য, গত ২২ মার্চ সাবরাং ইউনিয়নে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর গুজব রটিয়ে রাস্তা অবরোধ করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গুলিবিনিময়ের ঘটনায় ৩জন নিহত, আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। টেকনাফ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের নির্বাচন পরবর্তী হালচাল সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকায় মারধর ও এলাকা ছাড়ার হুমকি-ধমকি, হাতাহাতি, গুলি ফুটিয়ে আতংক সৃষ্টি সবমিলিয়ে নির্বাচনী এলাকা গুলোতে এখন আতংকের রেশ কাটেনি।
এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ আবদুল মজিদ জানান, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় মামলা হয়েছে ২টি। নির্বাচনের পর থেকে এপর্যন্ত মারামারি-হুমকি-ধমকির কারণে মামলা হয়েছে ৩টি। এরপরেও এলাকায় কেউ আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটালে আমরা তা কঠোর হস্তে দমন করবো । এর পাশাপাশি যে কোন ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যরা সদা প্রস্তুত রয়েছে।