শহিদুল ইসলাম, উখিয়া।
কক্সবাজারের উখিয়ার সর্বত্রে কাঁঠালের ফলন বৃদ্ধি হলেও দেশি আমের আকাল দেখা দিয়েছে। ফলে মৌসুমী ফল পাকা আমের তীব্র সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তবে চৈত্র মাসের রসালো ফল কাঠালের ফলন বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদিত কাঠাল স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হয়ে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারে বলে মনে করছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয়ভাবে আম, কাঠালের প্রচুর চাহিদা থাকার কারণে এখানে বিগত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে আম, কাঠালের ব্যক্তি মালিকানায় বাগান গড়ে উঠেছে শত শত।
চলতি মৌসুমে প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমাণ আমের মুকুল আসলেও অজ্ঞাত কারণে ৯৫ শতাংশ গাছের আমের মুকুল ঝরে পড়েছে।
হলদিয়াপালং ইউনিয়নের পাতাবাড়ী গ্রামের কৃষক শামশুল আলম জানান, প্রায় ৩ একর পাহাড়ী এলাকায় তার একটি আম বাগান রয়েছে। এবার প্রতিটি গাছে আমের মুকুল পড়ায় তিনি খুশিতে আত্মহারা হয়ে উঠেছিলেন। অথচ, অন্যান্য বছরের তুলনায় দ্বিগুণ পরিচর্যা করার পরও গাছে মুকুল ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।
তিনি জানান, তার বাগানের সবকটি গাছ মুকুল শূণ্য হয়ে পড়েছে।
কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ে কর্মরত ব্লক সুপারভাইজার নাসির উদ্দিন জানান, অনাবৃষ্টি ও প্রচন্ড খরায় আমের মুকুল ঝরে পড়েছে। যে কারণে চলতি মৌসুমে দেশি আমের আকাল দেখা দিতে পারে।
অন্যদিকে রসালো ফল কাঠালের ফলন বৃদ্ধি পাওয়াতে কৃষকেরা খুশি। সম্প্রতি হাজিরপাড়া, দোছরী, মাইল্যারকুল, হরিণমারা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গাছভর্তি কাঠালে ভরপুর হয়ে উঠেছে বাগান। একেকটি গাছে দেড়শ থেকে দুইশরও অধিক কাঠাল ধরেছে।
স্থানীয় বাগান মালিক মনির আহমদ জানান, গত বছর তার বাগান থেকে প্রায় ৭০ হাজার টাকার কাঠাল বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। তিনি আরো জানান, চলতি বছর যে পরিমাণ কাঠাল ধরেছে তা যদি যথাসময়ে বাজারজাতকরণ করা সম্ভব হয়, তাহলে প্রায় শতাধিক গাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকারও অধিক কাঠাল বিক্রি করা সম্ভব হবে।
স্থানীয় পরিবেশবাদী নেতাকর্মীদের অভিযোগ, এলাকার এক শ্রেণির অসাধু কাঠ ব্যবসায়ী জোট পারমিটের নাম ভাঙ্গিয়ে নির্বিচারে আম, কাঠাল গাছ পাচার করছে। এভাবে ফলজ গাছ পাচার অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েক বছরে এলাকায় আম, কাঠালের তীব্র সংকট দেখা দিতে পারে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শরিফুল ইসলাম জানান, ফলজ গাছ কর্তন করে পাচার করার বিষয়টি উদ্বেগজনক। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বস প্রদান করেন।