মহেশখালী প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে জাইকার অর্থায়নে হতে যাচ্ছে দেশের বৃহৎ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। উক্ত প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যে জমি অধিকগ্রহণের কাজ শেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের কিছু অংশ ক্ষতিপূরণও পেয়েছেন। বাকী ক্ষতিগ্রস্ত মালিকসহ খেটে খাওয়া মানুষের জীবন অনটন অর্ধাহারে হয়ে ওঠেছে দূর্বীসহ ।
অভাব অনটনের সংসার চালাতে গিয়ে তাদের বোবা কান্নায় মাতারবাড়ীর আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। এরি মধ্যে গত জোয়ারে ভেসে গেছে কয়েক’টি গ্রামের রাস্তা-ঘাট বসতবাড়ী লবণ মাঠ ফলে আতংকিত হয়ে পড়েছেন লবণ চাষী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠে ইতিমধ্যে বেঁড়িবাঁধ স্থায়িভাবে নিমার্ণ না করে হলে আন্দোলনে যাবে বলে হুমকি দিয়েছেন। বলতে গেলে নিয়তির সাথে যুদ্ধে চলছে মাতারবাড়ীর লক্ষ মানুষের। সিঙ্গাপুরের স্বপ্ন দেখা এই মানুষ গুলো এখণ ঘুমের ঘোরে লাফিয়ে উঠে জোয়ারের পানিতে বসত বাড়ি ডুবে যাওয়ার আতংকে। ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী জাইকা কর্তৃপক্ষের গাফেলতির কারণেই দ্বীপের এ দশা বলে জানিয়েছেন।
গত ১০/১১ দিন ধরে জোয়ারে সময় জোয়ার ভাটার সময় ভাটার ফলে অথৈ জলের পানিতে ভাসছে মাতারবাড়ী অধিকাংশ গ্রাম ও চিংড়ি প্রজেক্ট। তলিয়ে গেছে প্রায় হাজার একর লবণ চাষের জমি এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক ঘর। কয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মাতারবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাখান ও স্থানিয় ব্যবসায়ী আবদু রশিদ।
সম্প্রতি বিদ্যুৎ মন্ত্রাণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্থানিয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দকে ১৫ দিনের মধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র’র আওতাধীন বেড়িবাঁধ নিমার্ণ কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও জাইকা এখনো বেড়িবাঁধ নিমার্ণ কাজ শুরু করেনি। মাতারবাড়ীর নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহ জানিয়েছেন, ১৫ দিনে মধ্যে ১২ দিন ইতিমধ্যেই অতিবাহিত হয়েছে। এখনো বেড়িবাঁধ নিমাণে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা। এখন বিষয়টি উপ-দ্বীপের ৭০ হাজার মানুষের অস্থিত্বের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন তারা আমাদের দুঃখ কষ্ট বুঝতে পারছেননা বুঝতে পারছিনা। তিনি বঙ্গবন্ধুর মানস কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহনকৃত জমির বেড়িবাঁধ নির্মাণে জাইকার অসহযোগিতার কারণে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন মাতারবাড়ির ৭০ হাজার সাধারণ মানুষ। যে এলাকায় জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে ওই এলাকায় কোন বেড়ীবাঁধ নেই। খোলা থাকায় ৭০ নং পোলন্ডারের অধিকাংশ ভাঙ্গা অংশ এখনো বন্ধ করা হয়নি। ওই ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে এখন সমগ্র মাতারবাড়ি জোয়ার ভাটায় পরিণত হয়েছে। যার ফলে লবণ মাঠ জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চাষীরা ও বসবাসকারিদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
তৃণমূলের জনপ্রিয় নেতা নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাস্টার মো: উল্লাহ মাতারবাড়ী বাসীর কথা চিন্তা করে স্থানীয় সাংসদ, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন, কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবো, মহেশখালী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার বরাবর এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে লিখিত আবেদন করেছেন মাতারবাড়ী দ্বীপের মানুষের দুঃখ দুর্দশা লাগবে।
মহেশখালী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো: আবুল কালামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মাতারবাড়ীতে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এ ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে ।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ সবিবুর রহমান জানান, বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করবে জাইকা। প্রয়োজনীয় সময়ে নির্মাণ না করায় সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও জাইকাকে অবহিত করা হয়েছে।