টেকনাফ প্রতিনিধিঃ
টেকনাফ পৌরসভা নির্বাচনের গত ২০ এপ্রিল তপশীল ঘোষণার পর সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। নিবার্চন কমিশন তপশীল মতে আগামী ২৮ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ, ২ মে মনোনয়নপত্র বাছাই, ৯ মে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং ২৫ মে নির্বাচন অনুষ্টিত হবে বলে জানা গেছে। গত ২২ ও ২৭ মার্চ দুই ধাপে টেকনাফ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর পরই দেশের সর্ব দক্ষিনে উপ-শহর টেকনাফ পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে পৌরসভার সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীগণ।
সেই সাথে রাজনৈতিক দলের নেতারাও তৎপর হয়ে উঠেছেন। ঝিমিয়ে থাকা রাজনৈতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়েছে নির্বাচনের উত্তাপ। এলাকার নিষ্ক্রীয় ক্লাবগুলোও নতুনভাবে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। সরকার দল ও বিরোধী দল সমূহের টিকে থাকা নিয়ে শুরু হয়েছে হিসাব-নিকাশ। পাড়ামহল্লা, চায়ের দোকান, অফিসসহ সর্বত্র বইছে নির্বাচনের হাওয়া। তপশীল ঘোষণার সাথে সাথে সর্বত্র এখন প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে টেকনাফ পৌর নির্বাচন। প্রকৃতপক্ষে টেকনাফ পৌর শহরে নির্বাচনের হাওয়া অনেক আগেই শুরু হয়েছে।
সম্ভাব্য প্রার্থীরা ঈদ, পূজা, জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ভোটারদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ছবি সম্বলিত নানা রঙের পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার প্রদর্শন করেছেন, যা ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী চলমান হালনাগাদ ভোটার তালিকায় ভোট ব্যাংক করার উদ্দেশ্যে ভোটার প্রত্যাশীদের অন্তর্ভুক্ত ও গেল ঈদে ভোটারদের মন জয় করার জন্য সাহায্যের হাত প্রসারিত করেছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, টেকনাফ পৌরসভা স্থাপিত হয়েছিল ২০০০ সালে। নির্বাচন অনুষ্টিত হয়েছিল ২০১১ সালের ২৭ জানুয়ারী। গেজেট প্রকাশিত হয় ২ ফেব্রয়ারি ২০১১ ইংরেজী। শপথ গ্রহণ করেছিল ৯ মে ২০১১ ইং। ১ম সভা অনুষ্টিত হয়েছিল ২৯ মে ২০১১ ইং। মেয়াদ শেষ হবে ২৯ মে ২০১৬ ইং।
এ পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোন আয়তন বাড়েনি। প্রার্থীর সংখ্যা যেকোন বারের চেয়ে এবার যে বেড়ে যাবে সে আলামত স্পষ্ট। মেয়র প্রার্থীর ক্ষেত্রে একই দলের একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী এবং কাউন্সিলরের ক্ষেত্রে তরুণদের সংখ্যাই বেশি হবে। এছাড়া বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও প্রতিদ্বন্ধীতা করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় ভাবে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষনায় অনেক দলীয় প্রার্থী স্ব-স্ব দলের সিনিয়র-জুনিয়র নেতাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। দলীয় নমিনেশন পেতে অনেকে আগে থেকেই স্ব-স্ব দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে তদবির-তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। এবার রাজনৈতিকভাবে প্রার্থী মনোনয়নের সিদ্ধান্তের কারণে পৌর নির্বাচনে আলাদা মাত্রা যোগ হয়েছে। দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা দেনদরবার শুরু করেছেন ইতোমধ্যে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ দলের মনোনয়ন পেতে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে দলীয় নেতাদের কাছে তদবির শুরু হয়েছে। সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীগণও ধর্ণা দিচ্ছেন।
এবারে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মতো পৌর নির্বাচনেও ইয়াবা ব্যবসায়ী, মানব পাচারকারী এবং তরুন প্রার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি চলবে টাকার খেলা। প্রার্থীরা চাইবেন টাকার জোরে, পেশী শক্তির জোরে বা ক্ষমতার জোরে বিজয় ছিনিয়ে আনার জন্য। কিন্তু এলাকাবাসীর প্রশ্ন ভিন্ন। টাকা থাকলে বা পেশী শক্তি থাকলে সবকিছু নিজেদের আয়ত্বে নিয়ে আসতে পারবে এটা সমপূর্ণ ভূল। তাঁদের মতে নির্বাচন এমন একটি বিষয় এখানে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার প্রশ্ন রয়েছে। যারা দেশ, জাতি ও এলাকার উন্নয়ন সাধন করতে পারবেন তাদেরকে আমরা ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করব।
বর্তমান যাঁরা জন প্রতিনিধি রয়েছেন তাঁরা যদি আবার প্রার্থী হন, তাঁদের ব্যাপারে ভোটারেরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করবেন। জনগণ ও এলাকার জন্য তারা কতটুকু অতীতে কাজ করেছেন তা খতিয়ে দেখবেন। এর উপর ভিত্তি করে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।
পৌরবাসীর মুখে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র আওয়ামীলীগ নেতা হাজী মো. ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান কাউন্সিলার আলহাজ্ব নুরুল বশর , পৌর আওয়ামীলীগ নেতা জাবেদ ইকবাল চৌধুরী , জামায়ত নেতা মো. ইসমাইল , পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক, বর্তমান কাউন্সিলার মাওঃ মুজিবুর রহমান , জাতীয় পার্টির নেতা ফেরদৌ আলম হেলাল মুন্সী, মো. জাহাঙ্গীর আলম মুখদের নাম শুনা যাচ্ছে।