সুনীল বড়ুয়া:
কক্সবাজারের রামু উপজেলার রশিদ নগর ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও বিএনপির বিদ্রোহী ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে ১ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের অন্তত ৩০জন। এদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা গুরুতর।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সন্ধ্যায় দুই পক্ষের সর্মকেরা মিছিল করার সময় ইউনিয়নের কাহাতিয়া পাড়া এলাকায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের রামু ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে গুরুতর জাফর আলম (৫০),নজির আহম্মদ,নুরুল আলম,মনসুর আলম (১৭),মো.রকিম (২২),সাহাব উদ্দিন (১৮),জহির আলম (২৪),আব্দুল করিমের নাম পাওয়া গেছে। এরা সবাই বর্তমানে কক্সবাজারে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়াও সাজ্জাদ নামের একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আব্দুল মান্নান জানিয়েছেন,আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ১জনসহ ২১ জনকে রামু হাসপাতালে নেওয়া হয়। এদের মধ্যে ১ জন হোসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা.এসবি শর্মা জানিয়েছেন,রাত ৮টা পর্যন্ত নির্বাচনী সংঘর্ষে আহত ৮জন রোগী হাসপাতালে গেছেন। বেশিরভাই গুরুতর আহত। সবার শরীরে কারো মাথায় কারো হাতে,কারো পায়ে ধারালো দা,লাঠির আঘাত রয়েছে।
বিএনপি’র ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল করিমের সমর্থকেরা জানান,গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সন্ধ্যায় রশিদ নগর নাদেরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে ধানের শীষের একটি মিছিল করে কাহাতিয়া পাড়ার দিকে যাচ্ছিল। এ সময় মিছিলটি বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী সিরাজুল ইসলামের বাড়ির কাছাকাছি কাহাতিয়া পাড়ায় পৌঁছালে তাঁর সমর্থকেরা আকষ্মিকভাবে মিছিলে হামলা করে। এতে দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
এ সময় সিরাজুল ইসলামের সমর্থকেরা বন্দুক,ধারালো দা,লাঠি সোটা নিয়ে আব্দুর করিমের সমর্থকদের আঘাত করে এবং ফাঁকা গুলি বর্ষন করে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০জন আহত হয়। তাদের দাবী আহতদের বেশিরভাগই ধানের শীষের সমর্থক।
হামলার ঘটনায় পুরোটাই সিরাজুল ইসলামকে দায়ী করে রামু উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুর শুক্কুর বলেন, দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ এবং দলীয় নির্দেশ না মেনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় গত ১৩ মে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। এর আগে তিনি রামু উপজেলা বিএনপির সদস্য এবং রশিদ নগর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওযার্ডের সভাপতি ছিলেন। তিনি দাবি করেন,সম্পূর্ণ পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যমূলক ভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
রামু থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান,সংঘর্ষের ঘটনায় রাত দশটা পর্যন্ত ১৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এখনো পর্যন্ত কোন পক্ষ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।