হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি :
রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের বোমাংখিল গ্রামে বন্যহাতির তান্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ভোর সকাল ৬টায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় প্রাণরক্ষা করতে গিয়ে আহত হয়েছে আয়েশা বেগম নামের এক শিশু।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ফজরের নামাজ শেষ করে মসজিদ থেকে মুসল্লিরা রাস্তায় নেমে হঠাৎ বিশালকার একটি বন্য হাতি দেখতে পেয়ে মাইকে গ্রামবাসীকে সর্তক থাকার জন্য প্রচারণা চালানো হয়। মুহুর্তে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন শত শত উৎসুক জনতা। এদিকে জনতার উপস্থিতি দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে বিশলাকার বন্যহাতিটি পর্যায়ক্রমে বোমাংখিল গ্রামের ফরিদ আহমদ, রশিদ আহমদ ও আওয়ামীলীগনেতা হাবিব উল্লাহ চৌধুরীর বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। এসময় মানুষ ভয়ে দিকবেদিক ছুটাছুটি শুরু করে।
সকাল ৯টায় গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ এএসআই পলাশ চন্দ্র সিংহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর হাতিটি বোমাংখিল গ্রাম থেকে গর্জনিয়া-উখিয়ার ঘোনা সড়ক হয়ে পাহাড়ের দিকে চলে যায়। এসময় দৌঁড়াতে গিয়ে হাতির শুড়ের আঘাতে আহত হন অয়েশা বেগম (৮)। সে ইউনিয়নের পশ্চিম বোমাংখিল গ্রামের মোহাম্মদ হোছাইনের মেয়ে। তবে তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে পরিবারের সদস্যরা।
আওয়ামীলীগনেতা হাবিব উল্লাহ চৌধুরী জানিয়েছেন, বন্যহাতি তান্ডব চালিয়েছে তার বাড়ির বারান্দা, রান্নাঘর, মুরগীর খামার ঘর, ও অর্ধশত বছরের ইতিহাস সম্বলিত গেইট এবং ওয়াল ভাঙচুর করেছে। ফরিদ আহমদ জানিয়েছেন, বন্যহাতির হামলায় তার দালান ঘরের বারান্দা, বিভিন্ন প্রকারের ৫০টি বৃক্ষ, টমেটো ক্ষেত ও তামাক ক্ষেতের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রশিদ আহমদ বলেন, তার ১০টি বৃক্ষ, বাড়ির একাংশ ও তামাক চুল্লি ভাঙচুর করেছে বন্যহাতি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে একই ঘটনায় স্থানীয় মোহাম্মদ ইসমাইলের ডিব টিবওয়েল, তামাক ক্ষেত এবং উমর ফারুক চৌধুরীর আলু ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মৃত রশিদ আহমদের বাড়ির একাংশ ভাঙচুর করেছে বন্যহাতি। স্থানীয়রা বলছেন বন্যহাতির হামলায় সবমিলিয়ে প্রায় ৬ লাখ টাকা গচ্ছা গেছে।
গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বনবিভাগের লোকবল স্বল্প হওয়ার ফলে বনদস্যুদের দৌরাত্ম্য বেড়ে বন-জঙ্গল নিধন হচ্ছে।
তাই বন্যহাতি লোকালয়ে নেমে প্রতিবছর জান মালের ক্ষতি সাধন অব্যাহত রেখেছে।
তিনি জানান, গত তিন বছরে বন্যহাতির হামলায় গর্জনিয়া ইউনিয়নের প্রায় ১০জন মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে।