অনলাইন ডেস্কঃ
একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে আওয়ামী লীগের তিনটি, বিএনপির ১৪১টি বাতিল হয়েছে।
জাতীয় পার্টির ৩৮টি মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ৩৮৪টি।
৩০০ আসনের মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে সোমবার দলভিত্তিক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এ তথ্য মিলেছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, বাছাইয়ে বৈধভাবে মনোনীত প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৭৮ জন, বিএনপির ৫৫৫ জন ও জাতীয় পার্টির ১৯৫ জন রয়েছেন।
৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে জমা হওয়া ৩০৬৫টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বাছাইয়ে উৎরাতে পেরেছে ২ হাজার ২৭৯ট; বাতিল হয়েছে ৬৮৭টি।
মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর ৩৯টি আসনে আওয়ামী লীগের এবং ১০টি আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। বাছাইয়ে নতুন করে আওয়ামী লীগের ৩টি ও বিএনপির ৫টি আসন ফাঁকা হয়েছে।
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীদের আপিলের সুযোগ রয়েছে। তারপরই চূড়ান্ত হবে কার প্রার্থিতা টিকছে, আর কার টিকছে না।
আ. লীগ ও তার জোটের চিত্র
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিত্রদের মধ্যে গণতন্ত্রী পার্টির আটটির সবগুলো, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের ৩টির সবগুলো, তরীকত ফেডারেশনের ২০টির সবগুলো মনোনয়নপত্র বৈধ বলে স্বীকৃতি পেয়েছে।
জেপির ১৭টির মধ্যে ১৩টি, সাম্যবাদী দলের ৩টির মধ্যে ২টি, ন্যাপের ১৪টির মধ্যে ১১টি, ওয়ার্কার্স পার্টির ৩৩টির মধ্যে ৩২টি, জাসদের ৫৩টির মধ্যে ৩৯টি,
এছাড়া বিকল্প ধারার ৩৭টির মধ্যে ২৪টি মনোনয়নপত্র সঠিক রয়েছে। জাকের পার্টি ১০৮টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে ৭৩টি মনোনয়নপত্র বাছাই উৎরাতে পেরেছে।
বিএনপি ও তার জোটের চিত্র
বিএনপির রাজনৈতিক মিত্রদের মধ্যে বাছাইয়ে মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে গণফোরামের ৬১টির মধ্যে ৪৪টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ৩৭টির মধ্যে ৩২টি, জেএসডির ৫১টির মধ্যে ৪৪টি, এলডিপির ১৫টির ১২টি, বিজেপির ১১টির মধ্যে ৬টি, এনপিপির ৯০টির মধ্যে ৭৩টি, জাগপার ৬টির মধ্যে ৪টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির ১৩টির মধ্যে ১১টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের ৪৯টির মধ্যে ৪০টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের ১৫টির মধ্যে ১৪টি। কল্যাণ পার্টির ৫টির মধ্যে সবগুলোই বৈধ বলে স্বীকৃতি পেয়েছে।
বাম জোট
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সিপিবির ৭৭টির মধ্যে ৬৯টি, বাসদের ৪৯টির মধ্যে ৪৩টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ৩০টির মধ্যে ২৭টি মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে।
ইসলামী দল ও অন্যান্য
এছাড়া ইসলামী ঐক্যজোটের ৩২টির মধ্যে ২৭টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের ১২টির মধ্যে ৯টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ২৯৯টির মধ্যে ২৮১টি বৈধ হয়েছে।
এছাড়া বিএমএলের ১৭টির মধ্যে ৬টি, বিএনএফের ৭১টির মধ্যে ৫৬টি এবং বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ২২টি, খেলাফত মজলিসের ১৩টি মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে।
আ. লীগের ফাঁকা আসন বেড়ে ৩৯
ঠাকুরগাঁও-৩; নীলফামারী-৩ ও ৪; লালমনিরহাট-৩; রংপুর-১ ও ৩; কুড়িগ্রাম-২; গাইবান্ধা-১; বগুড়া-২, ৩, ৪, ৬ ও ৭; রাজশাহী-২; কুষ্টিয়া-২; বরিশাল-৩ ও ৬; পিরোজপুর-২ ও ৩; ময়মনসিংহ-৪ ও ৮; কিশোরগঞ্জ-৩; মুন্সিগঞ্জ-১; ঢাকা-৪, ৬ ও ৮; নারায়ণগঞ্জ-৫; সুনামগঞ্জ-৪; সিলেট-২; মৌলভীবাজার-২; ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২; ফেনী-১ ও ৩; লক্ষ্মীপুর-২ এবং চট্টগ্রাম-২ ও ৫।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় এ ৩৬ আসনে নৌকার প্রার্থী ছিল না।
এখন বাছাইয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় যোগ হল কুড়িগ্রাম-৪, সাতক্ষীরা ১ ও নারায়ণগঞ্জ-৩।
বিএনপির ফাঁকা আসন বেড়ে ১০
টাঙ্গাইল-৮, মৌলভীবাজার-২, কুমিল্লা-৭, লক্ষ্মীপুর-৪ ও চট্টগ্রাম-১৪। মনোনয়নপত্র জমার নির্ধারিত দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর পাঁচটি আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিল না। বাছাইয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় আরও ৫ আসনে বিএনপির আপাতত প্রার্থী নেই। এ আসনগুলো হল সুনামগঞ্জ-৩, মানিকগঞ্জ-২, জামালপুর-৪, পাবনা-১, বগুড়া-৭।
গত ২৮ নভেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন।
তারপর ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছিলেন, আওয়ামী লীগের ২৮১টি, বিএনপির ৬৯৬টি, জাতীয় পার্টির ২৩৩টি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ১৩৫৭টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।
দলীয় মনোনয়নপত্র জমা পড়ে মোট ২৫৬৭টি। এর বাইরে স্বতন্ত্র ৪৯৮টি মনোনয়নপত্র মিলিয়ে মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০৬৫।
এসব মনোনয়নপত্র রোববার বাছাই করতে বসেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠানো তথ্য একীভূত করেছেন ইসি কর্মকর্তারা।
৩-৫ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে চলছে আপিল আবেদন। ৬-৮ ডিসেম্বর হবে আপিল শুনানি।