হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী:
রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের থোয়াংগেরকাটা এলাকার নূর হোসেন ঘোনার আগা নামক গহীন জঙ্গলের গর্ত থেকে মহিলার গলাকাটা গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে এক জোড়া কানের দোল, হাতের চুড়িও জব্দ করা হয়।
শনিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় উপজেলা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরবর্তী জায়গা থেকে উক্ত গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার সকাল ১১টায় কিছু কাঠুরিয়া মহিলার মৃতদেহের খন্ডিত অংশ দেখে সবাইকে খবর দেয়। পরে গর্জনিয়া ফাঁড়ী পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। এসময় শরীরের কাপড় ও ওড়না দেখে লাশটি সনাক্ত করেন এলাকার আবদু শুক্কুরের মেয়ে ও নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্রী সেলিনা আক্তার। সেলিনা আক্তার কান্না জড়িত কন্ঠে উপস্থিত লোকজনকে বলেন, লাশটি আর কারও নয়। এটি আমার বড় বোন নুর নাহারের (২৫)।
সে গত চার মাস আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিল।
এদিকে আবদু শুক্কুর জানিয়েছেন, নূর নাহার নাইক্ষ্যংছড়ির দোছড়ি ইউনিয়নের হাজী নূর আহমদের ছেলে শহিদুল্লাহকে বিয়ে করেছিল। কিন্তু দেড় বছর আগে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। সেই থেকে নুর নাহার তার একমাত্র মেয়েটি নিয়ে নিজ বাড়িতে থেকে বিভিন্ন রাবার বাগানে শ্রমিক হিসাবে কাজ করতো। সর্বশেষ চার মাস পূর্বে বাইশারী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আলম কোম্পানির রাবার বাগানের মাঝি বেলাল উদ্দিন, নুর নাহারকে বাড়ি থেকে বাগানে কাজ করার জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু এর পর থেকে আর কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। বেলালের সঙ্গে যোগাযোগ করলে নূর নাহার অন্য একটি বাগানে কাজ করছে বলে বার বার আশ্বাস দিতো।
গর্জনিয়ার ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুর জব্বার জানান, বেলাল উদ্দিন থোয়াংগেরকাটা গ্রামের ছিদ্দিক আহমদের ছেলে।
বেলাল এর আগেও বাইশারীর এক চাক মেয়েকে হত্যা করে মাটি চাপা দিয়েছিল। এ ঘটনায় সে সাত বছর হাজত বাস করেছে।
গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ এএসআই পলাশ চন্দ্র সিংহ বলেন, মহিলার গলাকাটা গলিত মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সন্ত্রাসীরা মহিলাটিকে হত্যা করে মাটিতে ফুঁতে রেখেছিল।
রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, এ ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত পূর্বক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।