অনলাইন ডেস্কঃ
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, আমাদের সরকারের উচিত শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করা। এখন জিডিপির ২-৩ শতাংশ বিনিয়োগ করা হচ্ছে, অথচ বঙ্গবন্ধু তখনই বলে গেছেন জিডিপির মিনিমাম ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেয়া দরকার। তাহলে আমাদের শিক্ষিত জনগোষ্ঠী দেশের ভাগ্য বদলে দেবে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ইন এ ডিজিটাল ইরা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলাচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনাতয়নে অর্থনীতি বিভাগের আয়োজনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
ড. আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ভাগ্য বদলে দিচ্ছে কৃষকের সন্তানেরা। আমিও একজন কৃষকের সন্তান। আমি কখনো শহর দেখিনি। আমি যদি এখানে আসতে পারি তুমি কেন পারবে না।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে সাফল্যের পথরেখা থাকতে হবে। লেগে থাকো, হেরে যেয়ো না, সফলতা আসবে। যে তোমাকে কষ্ট দিয়েছে তার কথা মনে রেখো না, কষ্টটা মনে রেখো। এটাই তোমাকে সফল করবে।
ড. আতিউর বলেন, দেশে জন্মালেই দেশ আপন হয় না। দেশকে ভালোবাসতে হয়। এটাই আমার শক্তি। প্রকৃতি থেকে শিখতে হবে। নদী তার জল পান করে না, ফুল তার গন্ধ নেয় না। এভাবেই পরার্থপর অর্থনীতি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন ভালো অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তিনি যখন পূর্ব-বাংলায় জমিদারি পরিচালনা করেছেন তখন কাছ থেকে প্রজাদের কষ্ট দেখে তাদের জন্য সমবায় সমিতি করেছিলেন। পাবনায় সিন্ধু থেকে গাভি এনে খামার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সবার জন্য বিজলি বাতি চাই’ এ কথার মাধ্যমে বোঝা যায় সবার জন্য সাম্যের চিন্তা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
ড. আতিউর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালে দেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৭৯ ডলার। আজ ১৯০০ ডলার। আর ২০৪১ সালে ১৪ হাজার ডলার মাথাপিছু আয়ের স্বপ্ন দেখি আমরা। ১৯৭২ সালে দেশে এক কোটি টন চাল উৎপাদিত হতো। গত বছর ৩ কোটি ৮০ লাখ টন চাল উৎপাদন করেছেন কৃষকরা। বিভিন্ন গবেষণায় প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির হারের দেশের তালিকায় সারা বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশকে তৃতীয় অবস্থানে রাখছে। এ অবস্থান এ অর্থবছরেই প্রথম হবে।
নেতৃত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, একমাত্র নেতৃত্বই পারে দেশটাকে এগিয়ে নিতে। সবক্ষেত্রে সু-নেতৃত্ব চাই। তোমার সমস্ত কাজ যদি কারও মনে আশা জাগায়, স্বপ্ন দেখায়- তাহলে তুমিই নেতা। তোমাকে চ্যালেঞ্জের পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিলে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তাহলেই যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারী, বিশেষ অতিথি ছিলেন- উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. শাহিনুর রহমান এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম তোহা।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক অধ্যাপক আব্দুল মুঈদ। বিভাগের শিক্ষক মিথিলা ফারজানার সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক দেবাশীষ শর্মা। এছাড়া বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের সভাপতি এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।