সুজাউদ্দিন রুবেল:
দেশে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত ঘটনা থামাতে পারেনি কক্সবাজারের পর্যটকের উল্লাস। শুরুতে কক্সবাজারে পর্যটক আগমন নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংশয় থাকলেও ঈদের ছুটিতে পর্যটকে ভরপুর সৈকত শহর কক্সবাজার। এতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা খুশি।
শুক্রবার বিকেলে সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, সমুদ্র সৈকতের শৈবাল পয়েন্টে হতে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। এসব পর্যটক সমুদ্র স্নানের পাশাপাশি নানাভাবে উল্লাস করছে। এদের মধ্যে কথা হয় সাভার থেকে আসা সাজ্জাদ হাসান ও তার স্ত্রী রুবায়েত রহমানের দম্পতির সঙ্গে।
সাজ্জাদ হাসান জানান, দেশে জঙ্গিবাদ আছে এমন বিশ্বাস তার নেই। এতে আতঙ্কের কিছু নেই।
তার স্ত্রী রুবায়েত রহমান জানান, কক্সবাজার আনন্দের স্থান। এখানে আনন্দ উপভোগ করছেন পুরোদমে।
তাদের সন্তান ইমতিয়াজ ও রুহি দাবি করে কক্সবাজারে ভ্রমণের অনুভূতি মজার। স্কুল বন্ধ, ছুটি ভালই উপভোগ করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কেয়া জানান, গুলশান বা শোলাকিয়া যে ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তার প্রভাব সাধারণ মানুষের মধ্যে পড়েনি। তারা ঈদের আনন্দ সঠিকভাবে উপভোগ করতে চায়। আর তার জন্য তার বোনকে নিয়ে তিনি কক্সবাজার ছুটে এসেছেন।
ভ্রমণে আসা চিকিৎসক ইয়াছমিন আকতার জানান, কক্সবাজার ভ্রমণ অন্যরকম আনন্দের। সংঘাত মানুষের সেই আনন্দ কেড়ে নিতে পারেনি। মানুষ এতে ভয় পেলে ঘর থেকে বের হত না। কিন্তু কক্সবাজারে আগত বিপুল পর্যটক প্রমাণ করে মানুষ তাদের গুরুত্ব দিচ্ছে না।
সমুদ্র স্নানরত পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সী-সেইভ লাইফ গার্ডের ম্যানেজার ইমতিয়াজ জানান, সমুদ্র স্নানে পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে ইয়াছিন লাইফ গার্ডের ৫, রবি লাইফ গার্ডের ১৫, সী-সেইভ লাইফ গার্ডের ২৫ ও জেলা প্রশাসনের ৫ জন লাইফ গার্ড। ঈদে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
কক্সবাজার আবাসিক হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সহসভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসাইন জানান, ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি শংকা ছিল ঈদে পর্যটক আসবে কিনা। কিন্তু এসব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে পর্যটকরা। কক্সবাজারের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য পর্যটকরা ঠিকই এসেছেন। এখন কক্সবাজারের সব হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজের সব কক্ষ পর্যটকে কানায় কানায় ভরপুর।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কর্মরত ফটোগ্রাফার রহিম উদ্দিন জানান, ঈদের পর থেকে তাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। বেড়েছে আয়ও।
বিচ মার্কেটের ব্যবসায়ী নিয়ামত উল্লাহ জানান, বিপুলসংখ্যক পর্যটক আসায় বেচা বিক্রি হচ্ছে বেশি। এতে তারা অনেক খুশি।
বিচ মার্কেটের আচার ব্যবসায়ী করিম জানান, পর্যটক আসা মানেই বিক্রি হওয়া। লাভ হওয়া। এটাই তাদের জন্য মৌসুম।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমী জানান, কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও রয়েছে সজাগ। ফলে এ পর্যন্ত পর্যটকদের নিয়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
সৈকতের লাবণী, সীইন, কলাতলী, জাম্বুর মোড়, শৈবাল, মাদ্রাসা পয়েন্টে, ডায়াবেটিক পয়েন্টে, দরিয়ানগর, হিমছড়ি ও ইনানীতে ট্যুরিস্ট পুলিশের তল্লাশি চৌকি রয়েছে। এ ছাড়াও ৩টি গাড়ি প্রতিনিয়ত পর্যটন স্পটগুলোতে টহল দিচ্ছে।