অরিত্র আরাফাতের কবিতা
দূর রাত্তিরে
লোকালয় ছেড়ে রাত্তির চলে দূরে, ঠিকানা খুঁজেনি মাতাল লোকাল বাস,
কার ছিল ঠিক কতটুকু পিছুটান, কাছে আসবার পথ খুঁজে পরবাস।
জোনাকির ঝাঁক আলোর ড্রয়িং রুমে, প্রজাপতি ঘুম শূন্য স্টেশন,
মন ভেঙে গেছে টুকরো গ্লাসের মতো, রাত জেগে পুষি ঘুমের হেলুসিনেশন।
অভিমানে পথ দূরে চলে গেছে কবে, চোখ খুলে দেখি ফাঁকা আলোর আকাশ,
তুমিও মেলনি উড়বার ওড়না, চুল ছুঁয়ে গেছে মাতাল বৈরী বাতাস।
আমরা দুজন আলাদা করেছি পথ, ধারালো রেখেছি অবিশ্বাসের কান,
পথের মোড়ে দেখা হয় যদি ফের, এবার করব আগন্তুকের ভাণ।।
লেখক: অরিত্র আরাফাত, জন্মঃ ৮ আগষ্ট ১৯৯২, চট্টগ্রাম।
****************************************************
নাজমুস সাকিব রহমানের কবিতা
মিছেমিছি
আমরা জন্মদিনে আসি, চলে যাই মৃত্যুদিনে
এই দুটো দিন ছাড়া আমাদের আর কে চিনে?
আসা-যাওয়া; যাওয়া-আসার ঠিক মধ্যখানে
কেন জীবন খুঁজে যাই? মিছেমিছি অকারণে।
অন্ধকারে কোন বিশ্বাস নেই, আলোতে থেকে,
আমাদের কেউ পরাজিত হয়, আমাদের রেখে
এই পথে মাতাল জাহাজী— জাহাজটা টলে
আমাদের কেউ ডুবে যায়, ডুবে থাকা জলে।
লেখক: নাজমুস সাকিব রহমান। কবি ও গদ্যকার। জন্মঃ ১০ই নভেম্বর ১৯৯৩, চট্রগ্রামে।
**********************************************************************
ঈশান বড়ুয়ার কবিতা
বৃষ্টিবিলাস
পাখিদের বৃষ্টিবিলাস নেই,
বৃষ্টি হলেই তারা আশ্রয় খুঁজে।
ছাদের কার্নিশে, ব্যাম্বো ভ্যালির খড়ে।
শুকিয়ে উঠা খড় ভিজে যায়
যেটা তার বাসা ছিল।
মনে হয়, সোঁদা গন্ধ তার ভাল লাগা।
আরেকজন খুব বিরক্ত হয়।
সুন্দরী তার নাম।
পাশ ফিরে, চিৎ হয়ে সে আরাম খুঁজে,
ঘুমের রাজ্য অবগাহনের জন্য।
আজকাল খেঁকশিয়ালির বিয়ে হয় না।
শুধু পরিচিত মুখ খুঁজে সবাই!
অপার শান্তিতে বিশ্রামরত নীল এ্যাম্বুলেন্স।
নষ্ট হবার শাস্তিতে হলুদ ফুলের নিচে শায়িত মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত।
বৃষ্টি ধুয়ে তাকে পরিষ্কার করে।
লেখক: ঈশান বড়ুয়া।জন্মঃ ১৯৯২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর, চট্টগ্রাম। বর্তমানে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে অনার্স করছেন।
*************************************************************************************
তানভীর নওশাদ তান্নার কবিতা
কিছু কথা- পুরুষালী
সব ছেলেই ‘পুরুষ’ হয়ে ওঠে একদিন না একদিন।
যদি আয়ুষ্কালে থাকে অন্ততঃ তিরিশ।
যদি একটা চাকরি বাঁচে দুনিয়া’র কার্যদিবসে।
যখন গোঁফ-দাড়িরা আরেকটু পোক্ত হয়,
টাক পায় না সামিয়ানা,
অপূর্ব যে সময়টাতে ঠিক-ঠিক মানিয়ে যায় ভুঁড়িও।
বলতে গ্যালে কখনো ফুরায় না-
সে এক বিরাট ‘খানদানী সাইন’!
যাদের হরমোন দ্বিধাগ্রস্থ,
তারা ব্র্যান্ডেড ঘড়ি নিয়ে সেড়ে ফেলে ব্যক্তিত্বের সাজ।
আর সেখানে ‘সর্ববিদ্যাবিশারদরূপী চশমা খুবই যায়,
যেখানে ‘অ্যাটিটিউড’ সামলে নেয় ‘প্রাক-উপসংহার’।
এত্তকিছু লাগেনা,
যদি একটা ‘মেয়ে’ মাথায় ঘোরে।
যে ব্যস্ত মোবাইল-বোতামে, ছেলেটার খোঁজ নিতে।
যে ন্যাস্ত নিজের রুমে, তাদের স্বপ্ন নিয়ে,
ফেলে রেখে চুল- বটি’র সংসার,
যখন গোটা পরিবার যার যার গপ্পে।
সব মেয়ে ‘মেয়ে’-ই থেকে যায় ঐ একটা ছেলের জন্যে।
লেখক: তানভীর নওশাদ তান্না । জন্মঃ ১৮ জানুয়ারী, ১৯৯০ । চট্টগ্রাম । শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ এম.বি.এ, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট । বি.বি.এ, মার্কেটিং । পেশাঃ একটি বাংলাদেশী প্রাইভেট কোম্পানিতে ‘ব্র্যান্ড ও বিপণন নির্বাহী’ হিসেবে কর্মরত ।
***********************************************************************