খালেদ শহীদ, রামুঃ
করোনা ভাইরাসে কর্মহীন হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে গ্রামের তরুণদের সংগঠন ‘সংহতি অফিসের চর’। নিজস্ব তহবিল থেকে গ্রামের ৭০ অসহায় ও দুস্থ পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করেছে গ্রামের তরুণদের এ সংগঠন। করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) কোন আতংক নয়, সংকট মোকাবিলায় সর্তক থাকুন। সরকারি নির্দেশনা মেনে চলুন, ঘরে থাকুন নিরাপদ থাকুন। পরিবারকে নিরাপদে রাখুন। আর্তমানবতার তরে আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস অব্যাহত থাকবে, ত্রাণ বিতরণ কালে জনসচেতনতায় গ্রামের মানুষদের জানিয়েছে ‘সংহতি’ অফিসের চর এর সদস্যরা।
রোববার (৫ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় রামু কেন্দ্রীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অরাজনৈতিক ও সমাজ উন্নয়নমুলক সংগঠন ‘সংহতি অফিসের চর’ এর উদ্যোগে এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। প্রত্যেকটি পরিবারকে ৮ কেজি চাউল, ৫০০ গ্রাম মশুর ডাল, ৫০০ গ্রাম পেঁয়াজ, ১ লিটার তেল, ১ কেজি দেশী আলু দেয়া হয়েছে।
শতবর্ষী স্কুল রামু কেন্দ্রীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ‘সংহতি অফিসের চর’ এর মানবিক উদ্যোগ কর্মহীন মানুষের হাতে খাবার সামগ্রী তোলে দিয়ে ত্রাণ বিতরণ শুরু করেন, রামু প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি খালেদ শহীদ।
‘সংহতি অফিসের চর’ সভাপতি মোহাম্মদ শাহেদুল হক ও সাধারণ সম্পাদক মো. রহিম উল্লাহ রহিম জানান, করোনাভাইরাসের সংকট মোকাবিলায় গ্রামের ৭০ অসহায় গরিবদের মধ্যে খাবার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় গ্রামের কর্মহীন অসহায় দিনমুজুর, দুঃস্থ ও গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছি। আমাদের গ্রামের মানুষের অসহায়ত্ব দেখে, আমরা নিজেরাই অসহায়বোধ করেছি। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তারা বলেন, গ্রামের বিত্তবানরা যদি আমাদের পাশে দাঁড়ায়, কর্মহীন হতদরিদ্রদের যত ধরনের বিপদই আসুক আমরা মোকাবিলা করতে পারবো। গ্রামের মানুষের কল্যাণে ‘সংহতি অফিসের চর’ ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি পরিকল্পনা করছে আরও বড় পরিসরে কিছু করার।
ত্রাণ বিতরণের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ‘সংহতি অফিসের চর’ সহ-সভাপতি মো. নুরুল আলম আকাশ, মুহাম্মদ নুরুল আলম, সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. তারেক আজিজ চৌধূরী, সমাজসেবা সম্পাদক নুরুল হক চৌধূরী, সদস্য মো. ওসমান গণী, আবু তালেব, রাশেদুল ইসলাম, কাইয়ুম উদ্দীন প্রমুুখ।
ত্রাণ নিতে আসা কর্মহীন ষাটোর্ধ লুৎফুন নাহার, প্রতিবন্ধী ছৈয়দ আলম, চায়ের দোকানের শ্রমিক বদিউজ্জান, দিনমজুর মোহাম্মদ আলম জানান, আমরা দিনে এনে দিনে খাই। দু’সপ্তাহের বেশী হলো করোনা ভাইরাসের কারণে এখন কেউ কাজে নেয় না। কেউ কিছু দিলে তা দিয়ে দিন যাচ্ছে এখন। সরকারি ভাবে বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমরা আজ পর্যন্ত কোন ত্রাণ পাইনি। জেনেছি আমাদের গ্রামের কয়েকজন ছেলে মিলে আমাদের ত্রাণ দিয়েছে আজ।
‘সংহতি অফিসের চর’ এর উদ্যোমী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও মো. তারেক আজিজ চৌধূরী জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত বন্ধের কারণে গ্রামের কর্মহীন শত শত মানুষের রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে পড়েছে। নিত্যদিনের খাবারে টান পড়েছে এ সব নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর। গরিব অসহায় মানুষের সহায়তায় সরকার এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলেও আমাদের গ্রাম রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের অফিসের চর এলাকার হতদরিদ্ররা আজ পর্যন্তও গ্রাণ পায়নি। আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াসে গ্রামে কিছু প্রকৃত অভাবীদের ত্রাণ বিতরণের চেষ্টা করেছি। ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব ও হোম কোয়ারেন্টাইন সর্ম্পকে জানিয়েছি গ্রামের মানুষদের।