লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। এদিকে ডব্লিউএইচও জানিয়েছে ‘ওমিক্রন’কে মৃদু বলা ঠিক হবে না।
এই অবস্থায় জনসমাবেশ এড়িয়ে চলা থেকে শুরু করে সঠিকভাবে মাস্ক পরা আর ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজের পাশাপাশি বুস্টার ডোজ নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সকলে মিলে এই মহামারীর অবসান আমরা করতে পারি।
তারপরও কোভিড-১৯’য়ে আক্রান্ত হলে যত দ্রুত সম্ভব পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
আর এরকমই পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের থমসন জেফার্সন ইউনিভার্সিটি’র, সেইন্ট জোসেফ হেল্থ জেফার্সন মেডিকেল কলেজ’য়ের ‘ইন্সটিটিউট ফর অটোইমিউন অ্যান্ড রিউমেটিক ডিজিজ’য়ের পরিচালক ডা. রবার্ট জি. লাহিটা (ডা. বব)।
তিনি ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রথমেই নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখার পাশাপাশি অন্যরাও যাতে আপনার মাধ্যমে আক্রান্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখাই হবে বিচক্ষণের কাজ।”
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রথমেই যা করতে সেই বিষয়েও পরামর্শ দেন তিনি।
পরীক্ষা করা এবং মানুষের সঙ্গে সাক্ষাত বন্ধ
সামান্যতম লক্ষণ দেখা দিলেই পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। আর পরীক্ষার ফলাফল না পাওয়া পর্যন্ত নিজেকে রাখতে হবে আলাদা, পরামর্শ দেন ডা. বব।
তিনি বলেন, “অনেকেরই পজেটিভ রেজাল্ট আসার পরেও শরীরে তেমন লক্ষণ দেখা দেয় না। এরকম হলেও ঘরেই নিজেকে আলাদা রাখতে হবে। পাঁচদিন পর যদি কোনো শারীরিক অসুস্থতার লক্ষণ দেখা না দেয় তখন ঘর থেকে বের হলেও মাস্ক পরতে হবে।”
দ্বিতীয়বার পরীক্ষা
লক্ষণ থাকার পরও নেগেটিভ ফলাফল পাওয়া গেলে দ্বিতীবার পরীক্ষা করতে হবে।
“আর এক্ষেত্রে ‘পিসিআর টেস্ট’ করাই হবে উপযুক্ত কাজ,” বলেন ডা. বব।
“লক্ষণ না থাকলেও এই পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব কোনো ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কি-না।
ভিটামিন গ্রহণ
ডা. বব বলেন, “রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে জিঙ্ক, ভিটামিন ডি এবং সি গ্রহণ করতে হবে। আর অবশ্যই তা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে।”
ভাইরাসে আক্রান্ত হন বা না হন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এই ভিটামিনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ঘুম
কোভিড-১৯’য়ে আক্রান্ত হলে চরম ক্লান্তি অনুভূত হয়।
তাই ডা. বব পরামর্শ দেন, “এজন্যই অতিরিক্ত বিশ্রাম ও ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। ঘুম দারুণভাবে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ওপর প্রভাব ফেলে। সেই সঙ্গে দেহকে রোগের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।”
ভ্যাকসিন নেওয়া
“সুস্থ হওয়ার পর, ভ্যাকসিনের সবগুলো ডোজ সম্পূর্ণ করার পাশাপাশি বুস্টার ডোজ নিতে হবে।”
ডা. বব স্মরণ করিয়ে দিয়ে আরও বলেন, “একবার কোভিড হয়েছে মানে এই নয় আবারও আক্রান্ত হবেন না। অন্য ‘ভ্যারিয়েন্ট’ বা ধরনে আক্রান্ত হতেই পারেন। এক্ষেতে ভ্যাকসিন গুরুতর অসুস্থ হওয়া থেকে বাঁচাবে, হাসপাতালে যাওয়া ঠেকাবে।”
বাইরে নিরাপদ থাকার পন্থা
অনুসরণ করতে হবে সকল স্বাস্থ্যবিধি। যে দেশের প্রশাসন যেরকম নির্দেশনা দেবে সেগুলো ভালোমতো মানতে হবে। এমনকি যেখানে সংক্রমন কম সেখানেও মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, রেস্তোরাঁ বা মার্কেট এড়িয়ে চলাসহ জনসমাবেশ হয় এমন জায়গায় যাওয়া বাদ দিতে হবে।
শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাটা জরুরি
ডা. বব বলেন, “এমনকি দাওয়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। বদ্ধ ঘরে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে বহুগুন। তাই যেখানে দাওয়াতিদের মাঝে অপরিচিতর সংখ্যা বেশি সেখানে না যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ভ্রমণ বাদ দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।”
সূত্রঃ বিডিনিউজ