ইমরান হোসাইন:
পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের আফজালীয়া পাড়া ও মুহুরী পাড়ার লোকজনদের মধ্যে গত কয়েকদিনে হামলা-পাল্টা হামলার কারণে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি চরম অবনতি হয়েছে। ইতোমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা জরুরী বৈঠক করে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে করণীয় নির্ধারণ করেছেন। এ বৈঠকে উক্ত দুই পাড়ার গন্যমান্য ব্যক্তি ও সমাজপতিরা অংশগ্রহণ করেন।
মঙ্গলবার (৩০আগস্ট) সকাল ১০টায় ইউপি কার্যালয়ের হল রুমে এ জরুরী বৈঠকে সভাপতিত্ব করার পাশাপাশি আইনশৃংখলা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আইনশৃংখলা কমিটির সভাপতি শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম, মহুরী পাড়ার এমইউপি মোঃ আলমগীর, আফজলীয়া পাড়ার এমইউপি নুর মুহাম্মদ বদসহ অন্যান্য সকল ওয়ার্ডের পুরুষ ও মহিলা এমইউপিরা।
বৈঠকে উপস্থিত ইউপি সদস্যরা বলেন, গত ২৭, ২৮ ও ২৯ আগস্ট চলা ধারাবাহিক হামলা ও পাল্টা হামলা কিছুতেই কাম্য নয়। যা পুরো মগনামার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। স্থানীয় কিছু বখাটে এ হামলার ঘটনা জিইয়ে রাখতে ৩য় একটির পক্ষ হয়ে নিরহ লোকদের উপর হামলা চালাচ্ছে।
এ দ্বন্দ নিরসন কল্পে স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিদের সাথে চলতি সপ্তাহের ভিতর কার্যকরী প্রদেক্ষপ গ্রহনের চুড়ান্ত সিন্ধান্ত হয়। এছাড়াও ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মোঃ মোস্তাফিজ ভুইয়ার সহযোগিতা কামনা করায় ওসির নেতৃত্বে অভিযান জোরদার করেছে।
গত ৩দিনের হামলা ও পাল্টা হামলায় জড়িতের ধরতে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করছে পেকুয়া থানা পুলিশ। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দরা চেয়ারম্যানের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৩নং ওয়ার্ডস্থ আফজলীয়া পাড়া ও ৫নং ওয়ার্ডের মহুরী পাড়ার বাসিন্দারা একে অপরের প্রতিবেশী। রয়েছিল তাদের মধ্যে ভাল সম্পর্ক। কিন্তু গত ২৭আগস্ট রাতে আফজলীয়া পাড়ার নুুরন্নবীর ছেলে জয়নাল আবেদিনকে মহুরী পাড়ার কিছু বখাটে মারধর করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৮আগস্ট সন্ধ্যায় মহুরী পাড়ার এক ব্যক্তিকে মারধর করে আফজালীয়া পাড়ার কিছু বখাটে। একইভাবে, ২৯আগস্ট আবারো দু’পাড়ার উশৃংখল যুবকরা একে অপরের প্রতি হামলা পাল্টা হামলা চালালে যুবলীগ নেতা নুরুচ্ছফা সওদাগর আহত হয়। অথচ হামলা পাল্টা হামলায় আহতরা ঘটনায় জড়িত নয়। স্থানীয় কয়েকজন বখাটে এ হামলা চালিয়ে সটকে পড়ে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম হামলার বিষয় জানতে পেরে আহতদের তাৎক্ষণিক উদ্ধার ও চিকিৎসা সহযোগিতা করেন। বিষয়টি তিনি পেকুয়া থানার ওসিকে অবগত করলে তিনি পুলিশ ফোর্স নিয়ে দু’পাড়ার উৎশৃংখল যুবদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করে। তবে অপরাধিরা পালিয়ে যাওয়ায় কোন অপরাধীদের আটক করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, দু’পাড়ার হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা কিছু ব্যক্তির ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য। ওয়াসিম ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকার আইন শৃংখলা উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ মিথ্যা অভিযোগে তাকে এ ঘটনায় একটি পাড়ার পক্ষে জড়ানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু তিনি সে পাড়ার বাসিন্দা নয়। এসব অপপ্রচার সুশাসনের জন্য কিছুতেই কাম্য নয় বলে স্থানীয়দের অভিমত।
মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম বলেন, আফজলীয়া পাড়া ও মহুরী পাড়ার মধ্যে সংঘর্ষ পুরো দু’পাড়ার লোকজন জড়িত নয়। দু’পাড়ার কিছু বখাটে এ ঘটনা ঘটাচ্ছে। তাতে ইন্ধন দিচ্ছে মহুরী পাড়ার রিপন নামের এক যুবক। আওয়ামী সহযোগি সংগঠনের নেতা দাবী করলেও গত নির্বাচনে সে জামায়াত প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে সব কিছুই করেছেন। যা এলাকাবাসী দেখেছে। এলাকার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে কিছু বখাটের নেতৃত্ব সে দিচ্ছে।
এছাড়াও ইউপি কার্যালয়ের ফাইল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে সে একজন বাটপার। ইউপি কার্যালয়ে বাটপারের তালিকায় তার নাম রয়েছে। মগনামার আইন শৃংখলা রক্ষার্থে পেকুয়া থানা পুলিশকে সাথে নিয়ে ইউপি কার্যালয়ের সকল সদস্যকে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এছাড়াও মনগড়াভাবে আমাকে জড়িয়ে স্থানীয় কিছু পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশন করেছে। তা খুবই দুঃখজনক। তাই, স্থানীয় সংবাদকর্মী ভাইদের প্রতি আমার অনুরোধ আসল ঘটনা অনুসন্ধান করে আপনারা লিখুন। তাতে অপরাধীরা শনাক্ত হবে।
পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মোঃ মোস্তাফিজ ভুইয়া বলেন, মগনামার দু’পাড়ার লোকদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। হামলায় অংশগ্রহনকারীদের ধরতে কয়েকদফা অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অপরাধীরা কিছুতেই আইনের হাত থেকে বাঁচতে পারবেনা।