প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু:
কক্সবাজারের রামু উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রীয় সীমা বিহারে শুভ ভাদ্র পূর্ণিমা তথা মধু পূর্ণিমা উদযাপিত হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শুভ মধুপূর্ণিমা উদযাপিত হয়।
ভোরে বুদ্ধপূজা, সকাল ৮টায় জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১০টায় সংঘদান ও অষ্ট উপকরণ দান, দুপুর ২টায় ভিক্ষুসংঘকে মধুদান, বিকাল ৪টায় ধর্মসভা এবং সন্ধ্যায় দেশ ও বিশ্বশান্তি কামনায় হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে সমবেত প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উপসংঘরাজ, একুশে পদকপ্রাপ্ত ভদন্ত সত্যপ্রিয় মহাথের’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ধর্ম দেশনা দান করেন ভদন্ত প্রিয়রত্ন মহাথের, ভদন্ত করুণাশ্রী থের, ভদন্ত শীলপ্রিয় থের, ভদন্ত প্রজ্ঞাতিলোক ভিক্ষু প্রমূখ।
সভায় ভদন্ত সত্যপ্রিয় মহাথের বলেন, তির্যক প্রাণী হলেও পর বানর বুদ্ধকে মধুদান করে এক অক্ষয় ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। বুদ্ধ জগতের সকল প্রাণীর সুখ কামনা করেছেন, দুঃখ মোচনের চেষ্ঠা করেছেন, সবাইকে ভালবাসার শিক্ষা দিয়েছেন। সেই তির্য়ক প্রাণীও বুদ্ধকে শ্রদ্ধা, ভক্তি এবং ভালবাসা দেখাল। এই উর্বর শিক্ষা আমাদের গ্রহণ করতে হবে। মধু পূর্ণিমার অন্তরালে ত্যাগ, ভালবাসা, একতা এবং সাম্য-মৈত্রীর আবেদন রয়েছে। আমাদের ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক এবং নাগরিক জীবন সমৃদ্ধ করার জন্য এই শিক্ষা কাজে লাগাতে হবে। তাহলে আজকের মধু পূর্ণিমা উদযাপনের সার্থকতা আসবে।
উল্লেখ্য, আজ থেকে আড়াই হাজার বছরেরও আগে পারলেয়্যক নামক বনে বুদ্ধ বর্ষাবাস অধিষ্ঠান করেছিলেন। বুদ্ধ তাঁর জীবনের দশম বর্ষবাস উক্ত বনের ভদ্রশাল নামক এক বৃক্ষের নিচে অধিষ্ঠান করেছিলেন।
সেই বনের এক বানররাজা হস্তীরাজের বুদ্ধসেবা দেখে সেও বুদ্ধকে শ্রদ্ধায় মধুদান করেছিল। সেদিন ছিল ভাদ্র পূর্ণিমা। তাই ভাদ্র পূর্ণিমার অপর নাম মধুপূর্ণিমা। দিনটিকে প্রতিপালন করার জন্য বৌদ্ধরা এখনো ভিক্ষসংঘকে মধুদান দিয়ে থাকেন।