শহিদুল ইসলাম, উখিয়া:
পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে চোরাইপথে আসা মরণ নেশা ইয়াবাসহ বোতলজাত মাদকদ্রব্য ছেয়ে গেছে উখিয়ার গ্রামীণ জনপদ। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন স্পটে চলছে খুচরা মাদকের রমরমা বাণিজ্য। মাদকের আগ্রাসন ভয়াবহ আকারে বিস্তৃত হওয়ায় যুবসমাজ বিপদগামী হয়ে পারিবারিক সহিংসতা অনেকাংশে বেড়ে গেছে বলে দাবি করছেন সচেতন মহল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে জানা যায়, বুধবার সকাল ১০টার দিকে টেকনাফ থেকে ছেড়ে আসা মোটরসাইকেল আরোহী ২জন পাচারকারী সাথে থাকা ইয়াবার প্যাকেট ছিড়ে গিয়ে উখিয়ার টিএন্ডটি এলাকার সড়ক পথে ইয়াবার ছড়াছড়ি হয়ে পড়ে। এসময় স্থানীয় শত শত নারী-পুরুষ-শিশু ইয়াবা কুড়াতে রাস্তায় বেরিয়ে আসে।
উখিয়া থানার এসআই মাঈন উদ্দিন ইয়াবার খুঁজে মানুষ বেরিয়ে আসার কথা স্বীকার করলেও তিনি ইয়াবার অস্থিত্ব খুঁজে পাননি বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তবে উখিয়া কলেজের বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র জানান, ইয়াবার প্যাকেট ছিড়ে যাওয়ায় গ্রেপ্তার এড়াতে মোটরসাইকেল আরোহীরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছে।
গ্রামবাসীর অভিযোগ কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তিভিত্তিক এক শ্রেণির রোহিঙ্গা পাচার কারীর মাধ্যমে সীমান্তের নাফনদী পার হয়ে ইয়াবার চালান বস্তি এলাকায় মজুদ হয়। পরে গ্রামগঞ্জের খুচরা মাদক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে এসব ইয়াবা পাড়া মহল্লায় ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী, বালুখালী, রাজাপালং ইউনিয়নের কুতুপালং, উখিয়া সদর, ডিগলিয়াপালং, ডেইলপাড়া, আমতলী, রতœাপালং ইউনিয়নের কোটবাজার মসজিদ রোড, রতœা তেলীপাড়া, টেকপাড়া, পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের পার্শ্বে, ভালুকিয়াপালংসহ বিভিন্ন চায়ের দোকান, মুদির দোকান, পান, বিড়ি-সিগারেটসহ চনা বাদাম বিক্রির আড়ালে খুচরা মাদক বিক্রি হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী অভিযোগ করে জানান, রত্নাপালং পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের পার্শ্বে চায়ের দোকানের আড়ালে নাছির উদ্দিন মেম্বারের ছেলে নজরুল ইসলাম খুচরা মাদকদ্রব্য বিক্রি করে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। ইতিপূর্বে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তার বাড়ীতে তল্লাসী চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদক দ্রব্য সহ নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রীকে আটক করেন। এসময় কিছুদিন মাদক বেচাকেনা বন্ধ থাকলেও বর্তমানে পুরোদমে তারা মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। ফলে এলাকার কিশোর যুব সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে সমাজে অস্থিতিশীল পরিবেশে সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে উখিয়া থানা পুলিশ সদর দারোগা বাজারের শুটকি পল্লীতে অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য সহ বাজারের দারোয়ানকে আটক করে।
আকারে ছোট ও নিরাপদ বহন যোগ্য হওয়ার সুবাদে পুলিশ বার বার চেষ্টা করেও খুচরা মাদক ব্যবসায়ী চক্রদের হাতে নাতে গ্রেপ্তার করতে না পারায় সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখন ইয়াবাসহ বোতলজাত মাদকের বিস্তৃতি বেড়েছে বলে দাবি করে হেল্প কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম জানান, মাদকাসক্তির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে পারিবারিক সহিংসতা বেড়েছে। তিনি বলেন, মাদকাসক্ত পুত্রের হাতে প্রতিনিয়ত লাঞ্চিত হচ্ছে বয়োবৃদ্ধ পিতা মাতা।