ইমরান হোসাইন:
পেকুয়া উপজেলার আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরীর বাজারের বাহাদুর শাহ মার্কেটে গত ১৬সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে হৃদয় এন্টারপ্রাইজ, এরশাদ বেডিং হাউস ও ইত্যাদি স্টোরে দূর্ধর্ষ চুরি ঘটনার মামলা করেছেন ব্যবসায়ীরা।
এঘটনায় বাজারের চুরি হওয়া দোকান হৃদয় এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ রিদুয়ান বাদী হয়ে উত্তর গোঁয়াখালী এলাকার মৃত আনু মিয়ার পুত্র বাজার পাহারাদার জসিম উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে আরো কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে পেকুয়া থানায় মামলাটি রুজু করে। যার মামলা নং ০৯/১২৪। ওইদিন বাজার কমিটির নেতারা ও মার্কেটের মালিক পাহরাদার জসিম উদ্দিনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পরে, পুলিশ আটককৃতকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই টিবলু মজুমদার গতকাল সরোজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চুরি হওয়া দোকানের কাটা তালাগুলি জব্দ করেন এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সাক্ষ্য গ্রহন করেন।
এদিকে পেকুয়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত কয়েকমাস ধরে পেকুয়া বাজারে আশংকাজনকহারে চুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারের প্রত্যেকটি পয়েন্টে পাহারাদার থাকলেও চোরের দল কয়েকজন পাহারাদারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় মালামাল চুরি করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে থাকে। গত কিছুদিন আগে ডিজে রিমিক্সি নামের এক মোবাইল দোকান চুরি হয়। কিন্তু পাহরাদাররা রাত্রে বেলায় যেস্থানে বসে পাহারা জোরদার করে, ঘটে যাওয়া চুরির স্থানগুলো তার ১৫গজের ভিতরে। তাই স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এসব ঘটনার জন্য পাহরাদারদেরকেই দায়ী মনে করছেন।
সম্প্রতি পেকুয়া বাজারে চুরির ঘটনা বৃদ্ধি পেলে বাজার সমিতির সভাপতি হাজ্বি আকতারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দদের নিষ্ক্রিয়ভাব বেশ লক্ষণীয়। চোরের দলের সাথে জড়িত পাহারাদারের পক্ষ হয়ে বিভিন্ন তদবির করার অভিযোগও জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা। চুরির দায় এড়াতে রহস্যজনকভাবে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে চাকরিচুত্য করে বিদায় করে দেন অভিযুক্ত পাহারাদারদের। যার কারণে পেকুয়া বাজারে চুরি বন্ধ হচ্ছেনা ব্যবসায়ীদের অভিমত।
এছাড়াও বিগত কয়েক বছর আগে পেকুয়া বাজারের প্রসিদ্ধ হোমিও চিকিৎসক হারাধন বাবুর দোকানে চুরি করতে গিয়ে তাকে হত্যা করে চলে যায় দুবৃর্ত্তরা। ওই ঘটনা পাহারাদার আটক হলেও আসল রহস্য এখনো বের হয়নি আজ অবদি।
মামলার বাদী মোঃ রিদুয়ান বলেন, গত ১৬সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর পাহারাদার জসিম জড়িত ছিলনা দাবী করলেও পার্শ্ববর্তী ঋনদান সমিতির সিসিটিভির ভিডিওতে তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় মামলার আসামী করা হয়। তাছাড়াও ওই ঘটনায় পার্শ্ববর্তী আরেক দোকানের সওদাগর জড়িত আছে মর্মে সিসিটিভি ফুটেসে সন্দেহ করা হচ্ছে। যা তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে।
পেকুয়া বাজার সমিতির সভাপতি হাজ্বি আকতার আহমদ জানান, পেকুয়া বাজারে চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আগামী বোরবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ওসি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে বাজার সমিতির পক্ষ থেকে জরুরী বৈঠক ডাকা হয়েছে। এছাড়াও জড়িত পাহারাদারের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে পেকুয়া থানার এসআই ও তদন্তকারী কর্মকর্তা টিবলু মজুমদার আমাদের রামু কে বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। আটক ব্যক্তিকে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে অপরাধীদের ধরার চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, আগামী পর্বে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।