গিয়াস উদ্দিন ভুলু , টেকনাফ:
সীমান্ত নগরী টেকনাফ উপকুল দিয়ে প্রায় এক বছর মানব পাচার বন্ধ রয়েছে। কিন্তু চিহ্নত মানব পাচারকারি দালাল চক্রের কিছু কিছু সদস্য রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিগত এক বছর আগে এই সীমান্তের এই উপকুল দিয়ে মালয়েশিয়া পাড়ি দিত শত শত যুবক-যুবতী ও হতদরিদ্র মানুষ।
বাংলদেশ ও পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ামারের বিভিন্ন এলাকা থেকে অল্প টাকায় সাগর পথে মালয়েশিয়া পাড়ি দিত। এই অবৈধ পথে মালয়েশিয়া পাড়ি দিতে গিয়ে দালালদের খপ্পরে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত হতদরিদ্র পরিবার। আবার অনেক পরিবারের সদস্যরা সেই যে গেছে এখনো ফিরে আসেনি। কারণ এই সাগর পথে পাড়ি দিতে গিয়ে ট্রলার ডুবির ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে শত শত মানুষ। আবার অনেক সাধারণ মানুষ সঠিক সময়ে দালালের হাতে টাকা দিতে না পারায় নির্যাতনের শিকারে মারা যায়। এভাবে বছরের পর বছর চলতে থাকে মানব পাচারের এই ঘৃন্য ব্যবসা।
এই অবৈধ ব্যবসা করে মানব পাচারকারি চক্রের চিহ্নত সদস্যরা হয়েছে কোটিপতি। আর দালালদের খপ্পরে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সর্বশান্ত হয়েছে অনেক পরিবার। এই মানব পাচার প্রতিরোধ করতে কঠোর প্রদক্ষেপ নেয় বর্তমান সরকারের তৎকালিন প্রশাসনের সদস্যরা।
সেই কারণে মানব পাচার প্রতিরোধে বিগত ২০১৫ সালে শুরুতে সরকারের পক্ষ থেকে মানব পাচার প্রতিরোধ ও বন্ধ করার জন্য কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়। ঠিক তখনি টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ সদস্যরা মানব পাচারকারি দালালদেরকে ধরতে সাড়াঁশি অভিযান চালায়। উক্ত অভিযানে মানব পাচারকারি ও পুলিশ সদস্যদের বন্ধুক যুদ্ধ হয়। সেই বন্ধুক যুদ্ধে এই এলাকার চিহ্নত ৬ মানব পাচারকারি মারা যায়। এর পর থেকে মানব পাচারকারি দলের অন্যন্যা সদস্যরা গা ঢাকা দিতে শুরু করে। অনেক দালাল পুলিশের বয়ে পাড়ি জমায় পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার ও বিভিন্ন দেশে। সেই সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত থাকার পর বন্ধ হয়ে যায় মানব পাচারের মত ঘৃন্য কাজ। এর পর মানব পাচারকারি দলের সক্রিয় সদস্যরা দীর্ঘ দিন পলাতক থাকার পর এলাকায় আসতে শুরু করে। ঠিক তখনি টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা সু-কৌশলে প্রায় ২ শত মানব পাচারকারি দালালদের আটক করতে সক্ষম হয়।
সেই ধারাবাহিকতায় ২৪ সেপ্টেম্বর ভোর রাত ৩ টার দিকে আবারও টেকনাফ মডেল থানার এ এস আই কাজী আবদুল মালেকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া নেচার পার্ক এলাকায় অভিযান চালিয়ে আবদুল সোবাহানের পুত্র মো. ইউনুছ (৩২)কে আটক করতে সক্ষম হয়।
এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল মজিদ আমাদের রামু কে বলেন, আমি আসার পর থেকে টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সাড়াঁশি অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ শত মানব পাচারকারি দালালকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। এবং মানব পাচারের সাথে জড়িত পলাতক থাকা চিহ্নিত দালালদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আসা করি সীমান্ত নগরী এই উপকুল দিয়ে মানব পাচারের মত এই অবৈধ কাজে আর কেউ জড়িত হবেনা।