রামুতে দিল্লির তিন বাঙালি কবি’র সাথে সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রামু অফিসার্স ক্লাবে দিল্লির কবি প্রাণজি বসাক, কবি প্রণব দত্ত, দেহলিজ সম্পাদক কবি পীযুষ বিশ্বাসকে সম্ভাষণ জানান রামুর কবি-সাহিত্যিকরা।
কবিতা-ছড়া, কথামালা ও আড্ডায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠে সোমবার সন্ধ্যায় রামু অফিসার্স ক্লাব। প্রাণবন্ত বাংলা সাহিত্যের এ আড্ডায় সভাপতিত্ব করেন, রামুর সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাট্যকার মাস্টার মোহাম্মদ আলম।
কবি-সাহিত্যিকদের এ আড্ডায় দিল্লিতে বাংলা চর্চা, বাংলায় সাহিত্য কর্ম অবস্থান, সম্প্রীতির শহর রামুুর সাহিত্য কর্ম নিয়ে আলোচনা এবং দিল্লি-রামু সাহিত্য নিয়ে নতুন সেতুবন্ধন প্রতিষ্ঠার দিক উন্মোচন করা হয়। এ আড্ডার মুখ্য সঞ্চালক ছিলেন কবি-অধ্যাপক নীলোৎপল বড়ুয়া। সূচনা বক্তৃতা করেন কবি মানিক বৈরাগী।
দিল্লি’র বাঙালি কবি প্রাণজি বসাক বলেন, সম্প্রীতির রামু শহরে আজ আমাদের পদার্পণ হয়েছে। আমরা সত্যি ভাগ্যবান। সম্প্রীতির শহর রামুতে বাংলা সাহিত্যের এমন একটা সুন্দর চর্চা হচ্ছে। যা কিনা ঢাকা থেকে দূরে। আমরা কলকাতা থেকে দূরে। আপনাদের ব্যথা, আমাদের ব্যথা একই। সমব্যথী আমরা। আজ পবিত্র ভূমি রামু শহরে এসে, আমরা নতুন উদ্দীপনা নিয়ে ফিরে যাচ্ছি। এর মাধ্যমে দিল্লির সাথের রামু শহরের সাহিত্য চর্চার নতুন যোগাযোগের ক্ষেত্র সৃষ্টি হলো।
দিল্লিতে ২২ লক্ষ বাঙালি স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন জানিয়ে কবি প্রাণজি বসাক আরও বলেন, দিল্লিতে বাংলা সাহিত্য চর্চার বড় ক্ষেত্র তৈরি করেছি। আমাদের সাহিত্যে, কবিতায় গতিময়তা রয়েছে। দিল্লির গতিময় সাহিত্য কর্মের সাথে সম্প্রীতির শহর রামুর প্রাণময় যোগাযোগ রচিত হবে।
আকাশবাণী সংবাদ পাঠক কবি প্রণব দত্ত বলেন, কলকাতার বাঙালিরা আমাদের বলে দিল্লির বাঙালিরা অনেক বেশি বাঙালি। আমাদের মধ্যে বাঙালিয়ানা অনেক বেশি। বাংলা চর্চায়, বাংলা সাহিত্য কর্মে, বাঙালিয়ানায় আমরা সম্প্রীতির শহর রামুর সাথে থাকবো।
দেহলিজ সম্পাদক কবি পীযুষ বিশ্বাস বলেন, দিল্লি আটবার ভেঙ্গে নতুন ভাবে তৈরি হয়েছে। দিল্লি কখনও সাহিত্য-সংস্কৃতির রাজধানী ছিলো না। দিল্লিতে সবসময় রক্তক্ষয়ী রাজনীতি বিরাজমান ছিলো। সে রকম একটা পরিবেশে বসে, সাহিত্য কর্ম করাটা দুরূহ কাজ। তাতে বাংলা ভাষায় সাহিত্য কর্ম করা আরও দুরূহ ব্যাপার। বাংলা ভাষায় আমাদের অনেক ঋণ আছে। তিনি দিল্লির বাংলা সাহিত্যের ‘দেহলিজ’ ম্যাগাজিনে রামুর কবি-সাহিত্যিকদের লেখা পাঠানোরও আহ্বান জানান।
কবিতা ও ছড়া পাঠ, কথামালায় রামুর এ সাহিত্য আড্ডায় অংশ নেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিরুপম মজুমদার, উপজেলা প্রকৌশলী মঞ্জুর হাছান ভূঁইয়া, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহফুজুল ইসলাম, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদেকুর রহমান, চিন্তন সম্পাদক কবি খালেদ শহীদ, কবি নাসের ভূট্টো, ছড়ুয়া সম্পাদক কামাল হোসেন, রামু প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক ছড়াকার সোয়েব সাঈদ, কবি সজল কান্তি দে, কবি-চিত্রশিল্পী অরণ্য শর্মা, সংস্কৃতি কর্মী দীপক বড়ুয়া দীপু, আঁধার মানিক গ্রন্থাগার সভাপতি কফিল উদ্দিন, কবি সুস্ময় বড়ুয়া, কিন্নর সরকার পায়েল, দিপ্ত বড়ুয়া, অমৃত ধর প্রমুখ।
প্রাণময় আড্ডা শেষে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মুস্তফা’র আপ্যায়নের প্রীতিভোজে অংশ নেন দিল্লির তিন বাঙালি কবি।