আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খেলা হবে। কোনও ছাড়াছাড়ি নাই। ৭ জানুয়ারি ফাইনাল খেলা। বিএনপি নাই; তাদের এক দফা ভুয়া, বিএনপি ভুয়া, ধানের শীষ ভুয়া। ফাইনাল খেলবে ১ হাজার ৮৯৬ জন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন। যেখানে দল আছে ২৭টা। খেলার মাঠে বাংলাদেশ।
এ সময় কয়েক ব্যক্তি ও সংগঠনের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা বলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না, তারা ভুয়া। টিআইবি ভুয়া, ইফতেখার (ইফতেখারুজ্জামান) ভুয়া, সুজন ভুয়া, বদিউজ্জামান (বদিউল আলম) ভুয়া, এগুলো সব ভুয়া। এরা সব বিএনপির দোসর।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকালে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের বিজয় শোভাযাত্রার উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২৮ অক্টোবর লাল কার্ড খেয়ে বিএনপি বিদায় নিয়েছে। তাদের নেতা নেই, আন্দোলন করবে কাকে দিয়ে? নির্বাচন করবে কাকে দিয়ে? ৭০ শতাংশ লোক তৈরি হয়েছে শেখ হাসিনার নৌকাকে ভোট দেওয়ার জন্য।
তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা নিয়ে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ট্রেনে চারটি তাজা প্রাণ ঝরে গেল। এটা গাজায় ইসরায়েলের যে হত্যাকাণ্ড, সেই একই দৃশ্য বাংলাদেশে দেখলাম। যারা হত্যা করেছে, তাদের ক্ষমা নাই। তাদের নাশকতা, মানুষ পোড়ার আন্দোলন মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মিথ্যা কথা বলে তারা। ২১ হাজার নেতাকর্মী নাকি জেলে আছে। আমি পুরোপুরি খবর নিয়ে চ্যালেঞ্জ করছি, জেলে আছে ১১ হাজার। এর মধ্যে আজ জামিন পেয়ে দুই হাজার বের হয়ে যাচ্ছে। থাকছে ৯ হাজার।
তিনি বলেন, আগামী বছর আবার আন্দোলন হবে। এ বছর পারলো না, আগামী বছর আন্দোলন শুরু হবে। রোজার ঈদ-কোরবানির ঈদ করে পাঁচ বছর কেটে যাবে। পরের পাঁচ বছর শেষে গিয়ে আবারও আন্দোলন। তারেকের সাহস নাই, থাকলে দেশে এসে মোকাবিলা করতো। রাজপথে থাকতো, জেলে যেতো। জেলে যেতে যার ভয়, সে তো ভুয়া। তারেক রহমান ভুয়া। তার কথায় আন্দোলন আর হবে না।
নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা ভোট কেন্দ্রে বাধা দেবে, নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করবে, তাদের মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনমুখী। তারা প্রতিহত করবে। এদের প্রতিহত ও পরাজিত করে শেখ হাসিনাকে পঞ্চমবারের মতো বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাবো।
এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক স্লোগান দিয়ে বলেন, কে জিতবে ৭ তারিখ? শেখ হাসিনার নৌকা। সামনে আছে ভালো দিন, নৌকা মার্কায় ভোট দিন।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে কাদের বলেন, বাংলাদেশে কত মুসলমান, বিএনপি হচ্ছে স্বার্থের রক্ষক। যারা ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদ করতে জানে না, তারা মুসলমান নামে…অথচ এরা মুসলমানকে নির্বাচনে ব্যবহার করে। এটা বাংলাদেশে হবে না। শেখ হাসিনাই ফিলিস্তিনের হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। বিএনপি বলে নাই, জামায়াত কি নিন্দা করেছে? বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা যারা আছে, সব ভুয়া। কত হাঁটুভাঙা, কোমরভাঙাদের নিয়ে ঐক্যজোট করেছে। এলোমেলো-জগাখিচুড়ি ঐক্য ভুয়া।
আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নারী জাতিও জেগেছে। তারাও ভোট দিতে যাবে। যারা বলেন ৭ জানুয়ারি ভোটার আসবে না। কিন্তু ভোটারের লম্বা লাইনে ছেলেদের চেয়েও নারীরা বেশি উপস্থিত থাকবেন।
শোভাযাত্রায় ঢাকা জেলার ২০টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের ১৯ জন প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার কর্মীরা সুশৃঙ্খল ও ঐক্যবদ্ধ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর প্রমুখ।
এরপর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের গেটের সামনে থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সূত্র : ঢাকা পোস্ট