পবিত্র ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক টানা ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে পাহাড় কন্যা খ্যাত অপরুপা এই বান্দরবানে।রুমা-থানচি, লামা ছাড়া জেলার সকল পর্যটন কেন্দ্র গুলি পর্যটকদের পদচারনায় মূখরিত হয়ে উঠেছে এরই মধ্যে।
বুধবার (২এপ্রিল) সকাল থেকে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
স্থানীয়রা জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি মিলে টানা ছুটিতে পর্যটকের ব্যাপক সমাগম ঘটেছে পাহাড় কন্যা খ্যাত অপরুপা এই বান্দরবানে।বছর জুড়ে মেঘ-পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকের আনাগোনা থাকলেও বিশেষ ছুটির দিনে এই পর্যটকের সংখ্যা বাড়ে কয়েক গুন।এই মৌসুমে রুমা-থানচি,লামা ছাড়া জেলার অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্র গুলি পর্যটকদের পদচারনায় মূখরিত হয়ে উঠেছে।পর্যটক আগমনের ফলে ২-৫ এপ্রিল পর্যন্ত জেলা শহরের অধিকাংশ হোটেল মোটেল ও কটেজ গুলির কক্ষ বুকিং নিয়ে নিয়েছে বান্দরবান ভ্রমণ প্রত্যাশীরা।এমনকি ওই দিন গুলোতে ঢাকা থেকে বান্দরবান গামী নিয়মিত সকল গণপরিবনের আসন গুলোও বুকিং হয়ে গেছে। ২০২১ সালের পর এবারই এমন পর্যটকের উপস্তিতি দেখা যাচ্ছে বান্দরবানে।৩ ও ৪ এপ্রিল এই পর্যটকের উপস্থিতি আরও কয়েকগুন বাড়বে বলে জানান তারা। ফলে আগের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন বুনছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যাবসায়ীরা।
সরজমিনে মেঘলা,নীলাচল, দেবতাকুমসহ একাদিক পর্যটন কেন্দ্রে গিয়ে পর্যটকের বেশ উপস্থিতি দেখা যায়। তবে নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের প্রবেশধারে অপরিকল্পিত গাড়ি পার্কিং ও অতি পর্যটক আগমনের ফলে প্রায় দেড় কিমি যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে ওই সময় কেন্দ্রটিতে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয় দর্শনার্থীদের।
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সুকুমার তঞ্চগ্যা জানান, কেন্দ্রটিতে গত কাল ৯০০ ও আজ বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ১৮শ মিলে দুই দিনে প্রায় ৩ হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটেছে কেন্দ্রটিতে।
নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আদিব বড়ুয়া জানান, গতকাল ৩ হাজার ও আজ বিকাল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত ৪ হাজার মিলে দুই দিনে ৭ হাজার পর্যটকের সমাগম ঘটেছে এই কেন্দ্রটিতে।
রোয়াংছড়ি উপজেলা পর্যটন কেন্দ্র দেবতাখুম এর পরিচালনা কমিটির সভাপতি নু চো মং মারমা বলেন দেবতাখুম দীর্ঘদিন বন্ধছিল। ঈদের ছুটিতে এখন পর্যটকরা আসা শুরু করেছেন, মঙ্গলবার ৬শতাধিক ও বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১১শতাধিক পর্যটক দেবতাখুম ভ্রমণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন। পর্যটকদেরকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন, গাইড,দেবতাখুম পরিচালনা কমিটি, এলাকাবাসী সবাই খুশী। আগামীকাল আরো বেশী পর্যটক আসবেন বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।
বান্দরবান হোটেল-রিসোর্ট ওনার্স এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক ও হোটেল আরণ্য এর মালিক জসীম উদ্দিন জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে টানা ছুটির কারণে পর্যটকদের ভালো সাড়া পাচ্ছেন। এরই মধ্যে ২-৪ এপ্রিল জেলার অধিকাংশ কটেজ গুলো শতভাগ ও আবাসিক হোটেল গুলোতে ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়েগেছে। বাকি দিন গুলোতে অন্যগুলিও শতভাগ বুকিং পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি। এছাড়া পর্যটকদের সার্বিক সেবা নিশ্চিত করতে হোটেল মালিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করিম জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পেট্রোল দল বৃদ্ধি করা হয়েছে।এছাড়া আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে পোষাকে ও সাদা পোষাকে পুলিশ সদস্যরা কাজ করবে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন,সম্প্রতি পর্যটন কেন্দ্র দেবতাখুম পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে কোন অবনতি হয় কিনা! এখনো আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক আছে । রোজার আগে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের সাড়া পাওয়া গিয়েছিল ঈদের ছুটিতেও যথেষ্ট পর্যটকের সাড়া পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তিনি। রুমা ও থানচি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সুবিধা জনক সময়ে সেগুলোও খুলে দেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন বলে জানান।